কাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার অনুরোধ

শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য দায়ী থাকবে আপনি—প্রধানমন্ত্রীকে বললেন জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী  © ফাইল ছবি

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী আগামীকাল মঙ্গলবার ১ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একটা জাতিকে ধ্বংস করতে তার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা প্রয়োজন। দয়া করে এটি করবেন না। দরকার হলে শিক্ষার্থীরা দুই বা তিন শিফটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে। তারপরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন, না হলে জাতি সিকিমে (ভারতের একটি রাজ্য) পরিণত হবে। আর এর জন্য দায়ী হবেন আপনি।

মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘটনায় গ্রেফতার ৫৪ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে সোমবার (৩১ মে) আয়োজিত এক সমাবেশে উপস্থিত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকদের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে দুটি জালিম সরকার আছে। একটি হলো নেতানিয়াহুর ইসরায়েল, অন্যটি নরেন্দ্র মোদির ভারত। তাই যখন নরেন্দ্র মোদি এসেছেন তখন ছাত্ররা প্রতিবাদ করে ন্যায্য কাজ করেছেন। গ্রেফতার ৫৪ জনসহ সব ছাত্ররাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তারাই উন্নত ভবিষ্যৎ দেখাতে পারে। নিজের স্বার্থেই আমি তাদের আন্দোলনে আসি।

তিনি বলেন, ইসরায়েল এবং ভারতের গোয়েন্দা বাহিনী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে রেখেছে। ঘেরাও রাখার একটি দীর্ঘ পরিকল্পনা আছে। একটি হলো বাংলাদেশকে সিকিমে পরিণত করা। অন্যটি আপনারা দেখতেই পেয়েছেন। পাসপোর্ট থেকে ইসরাইলের নাম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন না উনি কী ভুল করছেন। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, ‘জাতিকে একত্রিতভাবে উন্নতির পথে আসতে’। প্রধানমন্ত্রীকে আমি অনেকবার বলেছি, সবাইকে ডাকেন, একত্রিত করেন। কিন্তু উনি ডাকেননি। তিনি সত্যকে ভয় পান।

সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এটি (আওয়ামী লীগ সরকার) জালিম সরকার। মানবতার প্রতি তাদের কোনো কর্ণপাত নেই। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের ভালোবাসা নেই। দেশে সব চলে কিন্তু তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে আজকের এই সমাবেশে অনেক শিক্ষার্থী থাকত। তাদের স্লোগানে সরকারের গদি কেঁপে যেত। তাই তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। আমাদের সব দাবি সরকারের কানে জোর করে ঢুকিয়ে দিতে হবে। যাতে মাথার যন্ত্রণায় তারা দাবি মানতে বাধ্য হয়।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মান্না বলেন, সরকার পতনে বৃহত্তর আন্দোলন ছাড়া আমাদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে পারব না। চলেন সবাই একসঙ্গে রাজপথে নামি।

যতদিন মুক্তি না দেবে ততদিন আমরা রাজপথে থাকব উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দল না। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তারা ছাত্র। আপনারা যারা রাজনৈতিক দল করেন, আপনাদের এই ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ। ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে আমরা আগামীতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। এই সরকার ৫৪ শিক্ষার্থীর যতদিন মুক্তি না দেবে ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদসহ ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে তারা  বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান নেন।

 


সর্বশেষ সংবাদ