সাকিবের জায়গায় অন্য কেউ হলেও মেনে নিত
- তসলিমা নাসরিন
- প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১১:১৯ PM , আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০, ১১:৩৯ PM
সাকিবের ক্ষমা-চাওয়ার ভিডিও দেখার কয়েক ঘন্টা পর দেখেছি রামদা হাতে নিয়ে জিহাদি মহসিন তালুকদারের ভয়ংকর অশ্লীল কুৎসিত বীভৎস জঘন্য একটি ভিডিও। এই ভিডিওতে সাফ সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, সাকিবের বাঁচার একমাত্র পথ ক্ষমা চেয়ে ফেসবুক পেজে ভিডিও প্রকাশ করা। জিহাদির হুকুম মেনেছেন সাকিব। সাকিবের জায়গায় অন্য কেউ হলেও মানতো।
মহসিন তালুকদারকে কে জন্ম দিয়েছে? এর উত্তর খুব সহজ। মূলত মসজিদ, মাদ্রাসা, ওয়াজ মাহফিল। মহসিন তালুকদার কি দেশে এক পিসই? একেবারেই না, প্রচুর পিস। সময়মত তারা দা কুড়োল চাপাতি বের করে। মহসিন মৃত্যুকে ভয় পায় না। ইসলামের জন্য সে নিজেকে হত্যা পর্যন্ত করতে রাজি। জিহাদিরা বিশ্বাস করে ইসলামকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিলে শর্ট কাটে জান্নাত পাবে।
বাংলাদেশ যে জিহাদিস্তান হয়ে উঠছে এগুলো তার ছোটখাট নমুনা। জিহাদিস্তান হওয়া থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়, জিহাদের উৎসে যাওয়া এবং একে নির্মূল করা।
ধর্মে খারাপ কথা লেখাই থাকে, সেগুলোকে মানলে চলবে না। এই কথাটি স্পষ্ট করে বলতে হবে। যদি বলতেই থাকো, ‘ধর্ম ভালো ধর্ম সব ভালো কথা বলেছে, ধর্ম অনুযায়ী পথ চলো’, তাহলে জিহাদিদের দোষ দিতে পারবে না, কারণ তারা ধর্ম মেনেই অন্যের ঘাড়ে কোপ বসাচ্ছে।
সাকিবের মতো জনপ্রিয় লোকের ওপর যদি হুমকি আসে, যে কারও ওপর আসতে পারে। কেউ শ্বাস নিলেও সেই শ্বাস ওদের অনুভূতির পালকে আঘাত করতে পারে। সুতরাং কারও রেহাই নেই।
অনুভূতির রাজনীতি আর অনুভূতির ব্যবসা চলছে দুনিয়া জুড়ে। মহসিন তালুকদাররা অনুভূতির ছোটখাটো বোড়ে, এদের মাঠে নামিয়ে দিলে রাজা মন্ত্রীকে খেয়ে কিস্তিমাৎ করে দিতে পারে। এইতো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হেলে পড়ছে, এরপর হেলবেন প্রধানমন্ত্রী।