তারেক রহমানের দেশে ফেরা: পর্ব-২

প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম
প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম  © টিডিসি সম্পাদিত

যুগ-যুগান্তরে মানব সভ্যতার অগ্রগতি ঘটিয়েছে দক্ষ ও ভালো নেতৃত্ব। জাতি-রাষ্ট্রের সামাজিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক মনন পরিবর্তনের ড্রাইভিং স্টেয়ারিং থাকে দেশপ্রেমিক অভিজ্ঞ সাহসী নেতার হাতে। অভিজ্ঞতা তৈরি হয় সংগ্রাম ও সংকটের মধ্য দিয়ে। দল ও রাষ্ট্র পরিচালনা একইসূত্রে গাথা হলেও কার্যক্রম ভিন্ন পরিক্রমা। সুশাসন নিশ্চিত হয় সুশাসকের স্বপ্ন-পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। জনপ্রিয় দল সরকার গঠন করলে সেই সরকার দেশের কল্যাণে দলীয় ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হয়। বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্রের গঠন-পুনর্গঠনে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমান প্রজন্ম-প্রজন্মান্তর ইউনিক ট্রিলজি হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন। তারেক রহমান ইতোমধ্যেই সংগ্রামশীল জীবনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উপর বড় ছাপ ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। Leadership is the process of encouraging and helping others to work enthusiastically toward objectives. (Keith Davis) অর্থাৎ ‘নেতৃত্ব হল উদ্দেশ্য অর্জনের নিমিত্তে অন্যান্য লোকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসাহিত ও সাহায্য করার একটি প্রক্রিয়া।’ 

শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হলে ছাত্ররা তাড়াহুড়ো করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে। অধ্যাপক ইউনূস বারবার বলেছেনÑ ছাত্ররাই তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। অর্থাৎ বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলসমূহের অবদানকে অস্বীকার করার চেষ্টা চলছে। সত্য অস্বীকার করে বিভ্রান্তির শূন্য মঞ্চে ইউনূস সরকার যেমন ক্রমশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে তেমনি ছাত্র নেতৃবন্দরাও হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। গণ-অভ্যুত্থানের সফলতা তো বটেই তৎপরবর্তী প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বিএনপি’র তৎপরতা ছিল অসাধারণ। ৫ আগস্টের পরপরই প্রথম দিকে বিচার বিভাগ ও আনসার লীগের প্রতিবিপ্লব তৎপরতার কথা সকলেরই বিদিত। বিএনপি সেসময় তারেক রহমানের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে সক্ষম হয়। বর্তমানে প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র পরিহার করে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ও প্রশাসনের কিছু ব্যক্তির গোপন ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। ড. ইউনূস সরকারকে ব্যর্থ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে ভেতরে ও বাইরে। তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের বড় থ্রেট। এ সকল থ্রেট থাকা সত্তে¡ও এবং সরকারের প্রত্যক্ষ অংশিদার না হয়েও বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইউনূস সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত  রেখেছে। মূলত জনগণ প্রত্যক্ষ করছে যে, বিএনপি’র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ছাড়া সরকারের ব্যর্থ হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। বহুমুখী ষড়যন্ত্রে তাৎক্ষণিকভাবে দলীয় সিদ্ধান্তের আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তারেক রহমানের দেশে উপস্থিতি অনিবার্য।   

সাদা চোখে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা দেখলে ভেতরের অস্থিরতা কিছুই বোঝা যায় না। দেশের রাজনীতির অভ্যন্তরের পরিবেশ চরম সংকট ও বিভাজনের মধ্যে আবর্তিত ও নিমজ্জিত। তার প্রমাণ পাওয়া গেল আবদুল হামিদের পলায়নের মধ্য দিয়ে। সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যা মামলার আসামি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর আবদুল হামিদ এভাবে পার পেলেন। বিষয়টি হতবাক করেছে পুরো জাতিকে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে শাহবাগ কেন্দ্রিক সরকারের পাতানো খেলার আন্দোলন জাতিকে গভীর সংকটের মধ্যে ফেলেছে। শৃঙ্খলা ফিরাতে হলে তৃণমূল থেকে রাজধানী অবধি পুলিশ-প্রশাসনের ভ‚মিকাকে আরো বেশি কার্যকর করে তুলতে হবে। গত আট মাসেও পুলিশ কার্যত তাদের মোর‌্যাল কারেজ ফিরে পায়নি। বন্ধ হয়নি ‘মব’। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। চুরি-ডাকাতি, হামলা-রাহাজানি নিত্যদিনের ব্যাপার। অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে ব্যাপক মাত্রায়। প্রায় ৯৫ শতাংশ অপরাধ দমন করা যাচ্ছে না। এসবই ঘটছে নির্বাচিত সরকার না থাকায়। সংস্কারের কথা বলে ক্ষমতায় থাকলেও গত আট মাসে দৃশ্যমান সংস্কারে ব্যর্থ হয়েছে ড. ইউনূস সরকার। যার কুফল জাতি দেখতে পাচ্ছে-আইন-শৃঙ্খলার নাজুকতায়- চরম নিরাপত্তাহীনতায়। এ মুহূর্তে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং টেকসই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বড়, ত্যাগী, সৎ, সাহসী, সর্বজন গ্রহণযোগ্য দেশপ্রেমিক নেতা খুবই জরুরি। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিশ^বাসীর কাছে পরিচিত হলেও প্রত্যক্ষ গণমানুষ সংযোগে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন না কখনো। বাস্তবতায় আছেন একমাত্র তারেক রহমান। জনগণ মনে করে, ভবিষ্যতে দেশের প্রধান হবেন তিনি, তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে। অবশ্য ৫ আগস্টের পর বিএনপি’র কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীর কর্মকাণ্ড দলের পূর্ববর্তী সুনাম কিছুটা ক্ষুণœ হয়েছে। আগের মর্যাদা, জনপ্রিয়তা কিছু ক্ষেত্রে অবনমন ঘটেছে। শত্রুপক্ষের অনেকেই বলা শুরু করেছে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পার্থক্য নেই- ‘মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’। প্রকৃতপক্ষে এখন মানুষ বাস্তবতার আলোকে নতুন চিন্তা করতে সক্ষম। ন্যায়কে ন্যায়, সত্যকে সত্য বলার অধিকার তৈরি হয়েছে। 

অন্যদিকে সরকারের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক উপদেষ্টা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চান। সমাজে ইভিল সেন্স প্রবৃত্তির মানুষগুলো দুষ্কর্ম ও অন্যায়-অমানবিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। একথা সত্য যে, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও জনপ্রিয় দল। বড় দল হিসেবে বিএনপি’র কিছু কিছু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে। যদিও বিএনপি অন্যায়কারীদের কিছু ক্ষেত্রে বহিষ্কার করেছে, কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে, তদন্ত অব্যাহত আছে। তারেক রহমান দেশে থাকলে দলের ভেতরে বিশৃঙ্খলাকারী ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতা-কর্মীরা মন্দ কাজে অংশগ্রহণ করতে সাহস করবে না। সমস্যার সমাধান হবে দ্রæত। 

দেশে ফিরে তিনি যদি সকল জেলা ও বিভাগে রাষ্ট্র সংস্কারের সমাবেশ করতে থাকেন, তার ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। দলে আরো বেশি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে। নিয়মতান্ত্রিক কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি’র নেতৃত্ব বাছাই হবে। কারণ কিছু থানায়-জেলায়-বিভাগে নেতৃত্বের গ্রæপিং বিদ্যমান। এই দ্ব›েদ্বর কারণÑ আর্থিক সংশ্লিষ্টতা, অন্যায্য বলপ্রয়োগ ও আধিপত্য বিস্তার, পদ-পদবী প্রাপ্তির অসুস্থ প্রতিযোগিতা। Iron out করে এসব দূর করতে হলে মূলত তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিকল্প নেই। তার উপস্থিতি আবশ্যক। দেশে এসে তিনি বিরতিহীনভাবে গ্রাসরুট লেবেলে জনসংযোগ করবেন। তৃণমূল হলো একটি পার্টির প্রাণ। জিয়াউর রহমানের মতো পায়ে হেঁটে গণমানুষের দ্বারে দ্বারে উপস্থিত হবেন। জন ম্যাক্সওয়েল বলেছেন-A Leader is one who knows the way, goes the way, and shows the way. তারেক রহমানের মধ্যে দেশের মানুষ জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছেন। এজন্য দলকে সুসংগঠিত করতে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ, মাঠে-ঘাটে সর্বত্র সর্বোচ্চ এফোট দিয়ে জনমানুষের কাছাকাছি যেতে হবে। নির্বাচন হলে সংখ্যাধিক্য আসন বিএনপি পাবে বলে জনসাধারণ মনে করেÑ এটা সত্য। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় টেকসই গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত ও জনমুখী কল্যাণ জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের বড় লক্ষণ।

বিএনপি’র নেতৃত্ব ক্রটিপূর্ণ হলে অন্য সব শক্তি একত্রিত হয়ে বিরোধিতায় সজীব-সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তারেক রহমান ৫ আগস্টের (২০২৪) পর একাধিক ভাষণ-বিবৃতিতে বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন কঠিন হবে। তিনি দলের সাংগঠনিক শক্তিকে একত্রিত করতে নেতা-কর্মীদের অন্যায্য কাজকে মেনে নেননি। তিনি এবং তার দলের নীতি নির্ধারকরা কঠোর হস্তে সেসব দমনের চেষ্টা করছেন। প্রকৃতপক্ষে খুবই নগণ্য সংখ্যক নেতা-কর্মীর জন্য কখনো কখনো এই জনপ্রিয় দলটির দুর্নাম হচ্ছে। তাছাড়া সামান্য ঘটনাকে ‘তিলকে তাল’ বানানোর জন্য বিএনপি বিরোধী একটি গোষ্ঠী প্রবলভাবে মিথ্যা প্রচার-প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।    

ধরা যাক, এই মুহূর্তে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১০ কোটি মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করে। কিন্তু ১০ কোটি মানুষের মধ্যে খুব বেশি হলে ৫০ হাজার নেতাকর্মী অন্যায় কাজে লিপ্ত। এজন্য তদন্ত করে ৫০ হাজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে; ৯ কোটি ৯৯ লক্ষ ৫০ হাজার সমর্থক বিএনপির পক্ষেই থাকবে। এমনকি এই অ্যাকশনের কারণে জনসমর্থন বেড়ে যাবে। জনগণ বিশ্বাস করে, ২০/২৫ হাজার মন্দ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যদি বিএনপি শাসনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাতে বিএনপির কোনো ক্ষতিই হবে না। বরং দলের ইমেজ অনন্য উচ্চতায় আসীন হবে। 

নেতা নির্বাচন ও দলের কমিটিতে দায়িত্ব দেবার ক্ষেত্রে সৎ-সাহসী, শিক্ষিত ও ন্যায়পরায়ণ বা ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের গুরুত্ব দিতে হবে। শহীদ জিয়ার মতো ট্যালেন্ট হান্ট প্রক্রিয়ায় মেধাভিত্তিক ডেডিকেটেড বিএনপি গড়ে তোলা সময়ের দাবি। নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে এজন্য নমিনেশন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়াটাও অত্যাবশ্যক। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ় নেতৃত্বে। শাসনকালের সাড়ে তিন বছরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো দেশের প্রয়োজনে মেধাবী ব্যক্তিদের দলে যুক্ত করা প্রয়োজন। শহীদ জিয়া বলেছিলেন, “আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান্স।” এদেশে রাজনীতিকে অনেকেই সহজ মনে করেন। রাজনীতি ও দেশগঠন জটিল বিষয়, দেশ সেবা করা হার্ডওয়ার্কিং এবং চ্যালেঞ্জিং। দলের নিবেদিতপ্রাণ, সৎ, মেধাবী নেতা-কর্মীদের স্কুটিনি করে যথাস্থানে দায়িত্ব দিতে হবে। Leadership consists of picking good men and helping them do their best(Chester W. Nimitz). তারেক রহমান দেশে অবস্থান ও সরাসরি তত্ত্বাবধান করলেই উপরি-উক্ত সমস্যাগুলোর যথার্থ সমাধান সম্ভব। ভার্চুয়ালি উপস্থিতি অন্যদিকে সরাসরি উপস্থিতি ভিন্ন ভিন্ন ডাইমেনশনের। ফিজিক্যাল উপস্থিতির ইম্প্যাক্ট হয় প্রায় আশি শতাংশ- বিশ শতাংশ অনলাইনে। যদিও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই তারেক রহমান অভ‚তপূর্ব সাফল্য পেয়েছেনÑচমৎকারভাবে গুছিয়েছেন তার দলকে, করেছেন শক্তিশালী; কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা আলাদা-ভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে তারেক রহমানের দেশে উপস্থিতিই রাজনীতির গুণগত মান উন্নয়নে বড় ধরনের প্রভাবক হয়ে উঠবে।

ইতোমধ্যে তারেক রহমানকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূস সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা এবং নব্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। অর্থাৎ সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ তারেক রহমানের ফিরে আসার সম্ভাবনাকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না। এমনকি প্রশ্নবিদ্ধ উপদেষ্টাগণ তারেক রহমান সম্পর্কে পশ্চিমাদের পূর্ব ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন। এসব নেগেটিভ ন্যারেটিভের যথার্থ জবাব হবে দেশে তারেক রহমান তথা জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তার প্রদর্শন এবং এর একমাত্র পদ্ধতি হলো নিরপেক্ষ নির্বাচন।  

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফলতার জন্য তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ড. ইউনূস এবং তারেক রহমান একসঙ্গে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করলে কোনো বাধাই বাধা হয়ে থাকবে না। অভ্যন্তরীণ, বহিঃশত্রু এবং ফ্যাসিবাদীদের সকল ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। দেশের মানুষের জন্যই তারেক রহমানকে দেশে প্রয়োজন। তিনি যে এরই মধ্যে কিংবদন্তীতুল্য জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছেন এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি যেদিন ঢাকায় ফিরবেন সেদিন লোকে-লোকারণ্য থাকবে রাজধানী। ঐতিহাসিক ও ব্যতিক্রমী দৃশ্য হবে সেদিন। বার্ডস আই দিয়ে ইমাজিনেশন করলেই দেখা যায় ঢাকায় অবতরণের আগেই কোটি কোটি জনতা তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে। 

দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনেই বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তার পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে। কোনো মিথ্যা মামলা এখনো যদি থেকে থাকে তা প্রত্যাহার বা বাতিল করতে হবে। ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের সমন্বয়ে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। অন্যথা দেশ আবারো ফ্যাসিবাদীদের হাতে পড়বে। একমাত্র তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ইতিবাচক বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সর্বাধিক আসন বিএনপি’ই পাবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হবে। অন্যদিকে ড. ইউনূসের সেইফ এক্সিট প্রশ্নে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যাবশ্যকীয়।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট (২০২৫) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে রাজনীতিবিদরা মনে করেন। অন্যদিকে অতি শিগগিরই দেশের জনগণের সঙ্গে সরাসরি দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ১০ আগস্ট বিকালে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেছেন, “ইনশাআল্লাহ শিগগিরই দেশের জনগণের সঙ্গে সরাসরি দেখা হবে।' তার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হবে— এই আশায় জনগণ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে।

লেখক: সাবেক চেয়ারম্যান, থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!