তারকাদের নিয়ে গুরুত্বহীন রিপোর্ট না লিখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে লিখুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন  © ফাইল ছবি

আমাদের সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক রাজনীতিতে ডুবে থাকে, কোন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নেন আর নেন না, নিয়মিত গবেষণা করেন এবং করান বা করেন না, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের থিসিস সুপারভাইস করান, নিয়মিত প্রতিদিন অফিসে যান কিনা- এমন সার্ভে করে নিয়মিত রিপোর্ট বা আর্টিকেল লিখতে পারেন। ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের শিক্ষক সম্বন্ধে মতামত নিয়ে তার ওপর লিখতে পারেন। 

প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকায় তারকাদের নিয়ে গুরুত্বহীন, যা অনেক সময় স্পেকুলেটিভ বা স্ক্যান্ডাল রিপোর্ট না লিখে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে লিখুন। লিখুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষক কত কত জায়গায় পার্ট টাইম পড়ান এবং কেন পড়ান। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক যদি অন্যত্র পার্টটাইম পড়াতে ব্যস্ত থাকেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান কীভাবে ভালো হবে? 

এসব বন্ধ করতে হলে এর মূলে হাত দিতে হবে। কারণে হাত দিয়ে কারণকে রিপেয়ার না করে অন্য যেকোনো আইনি সমাধান ফলপ্রসূ হবে না। আরো একটা সার্ভে হতে পারে। গত ১০ বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্লাসের সেরা ১০ জন শিক্ষার্থীর ট্র্যাক রেকর্ড। তারা কোথায় গেছে, কতজন বাংলাদেশে আছে, কতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছে বা হবে, এর একটা সার্ভে হতে পারে। গত ১৫ বছর যারা শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে, তারা ক্লাসের সেরা তিনজন বা সেরা পাঁচজনের মধ্যে ছিলেন কিনা।

গত ১৫ বছরে যারা শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের কতজন পিএইচডি ডিগ্রিসহ সরাসরি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে বা কতজন পিএইচডি প্লাস পোস্ট-ডকসহ নিয়োগ পেয়েছে, তার একটা সার্ভে রিপোর্ট হতে পারে। বাংলাদেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কতজন পিএইচডি ছাত্র ও পোস্ট-ডক ফেলো আছে, তাদের কতজন বিদেশি, এসবেরও একটা রিপোর্ট হতে পারে। 

আরো পড়ুন: অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ কি ক্ষমতা পাইয়ে ভাগ বসাতে গিয়েছিল?

একটা দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পুরোনো এবং ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা এমন হতে পারে না যে, শিক্ষক নির্ধারিত ৬০টি ক্লাসের জায়গায় অর্ধেক বা তার চেয়েও কম ক্লাস নেবেন। অন্যত্র পার্টটাইম যেখানে পড়ান, সেখানে ঠিকই নিয়মিত সব ক্লাস নেন। এমন হতে পারে না যে, দিনের পর দিন, এমনকি মাসেও একবার নিজের অফিসরুম খোলে না, তালাবদ্ধ থাকে। তারা কারা। তাদেরকে জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত। 

রিপোর্ট মানে একটা চিত্র, যা চোখের সামনে থাকলে নীতিমালা তৈরী করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এসব সার্ভে থাকলে এবং নিয়মিত হতে থাকলে শিক্ষকরা সচেতন হবে এবং থাকবে, যা শিক্ষার পরিবেশকে উন্নত করতে সাহায্য করবে।

লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

(ফেসবুক থেকে নেওয়া)


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence