অনন্য যবিপ্রবির মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগ

শেখ সাদী ও মিনহাজ
শেখ সাদী ও মিনহাজ  © টিডিসি ফটো

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠাকালীন চারটি বিভাগের মধ্যে অন্যতম ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (মাৎস্য ও সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান) বিভাগ। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। স্নাতক সম্পন্ন করে ১০টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। যবিপ্রবির এফএমবি ( মাৎস্যবিজ্ঞান) বিভাগ যেসকল কারণে অনন্য, তা তুলে ধরছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শেখ সাদী ও মিনহাজ।

মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম-
যবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলা থেকে বিভাগটি সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। মোট পাঁচটি পাঠদান কক্ষের মধ্যে দুটি ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ও তিনটি ডিজিটাল প্রজেক্টর সম্বলিত। প্রযুক্তি ব্যবহারে বাস্তবিক উদাহরণের আদলে শিক্ষকগণ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যপূর্ণ পাঠদান করতে পারেন।

শিক্ষক-
বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য রয়েছে ১৮ জন শিক্ষক। তন্মধ্যে ছয় (৬) জন অধ্যাপক, এক (১) জন সহযোগী অধ্যাপক, নয় (৯) জন সহকারী অধ্যাপক ও দুই (২) জন প্রভাষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশে এফএমবি বিভাগের শিক্ষকমণ্ডলী সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা।

ল্যাবরেটরি-
এফএমবি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবিক প্রয়োগের লক্ষ্যে রয়েছে তিনটি ল্যাবরেটরি। সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাবগুলো উন্মুক্ত। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি গবেষণামূলক কাজ ল্যাবগুলোতে করে থাকে। সকল আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন : ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপ, সাধারণ মাইক্রোস্কোপ, সেইফটি ক্যাবিনেট, মাইক্রোটোম মেশিন, পিসিআর মেশিন ইত্যাদি।

মাৎস্য জাদুঘর-
শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তোলা হয়েছে 'অ্যাকুয়াটিক বায়োডাইভার্সিটি মিউজিয়াম '। যা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মাৎস্য জাদুঘর৷ যেখানে রয়েছে প্রায় ৪৭৫ প্রজাতির স্বাদু ও সামুদ্রিক পানির মাছ ও জলজ প্রাণী। সমুদ্রে গিয়েও যখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ মাছের দেখা মেলেনা, সেই মাছগুলো সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা এই মাৎস্য জাদুঘর থেকে সহজে পরিচিত হয়ে ধারণা অর্জন করতে পারে। এই জাদুঘরের মাধ্যমে এফএমবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা নদী-সমুদ্রে না গিয়ে হাত-কলমে বাস্তবিক শিক্ষাও নিতে পারবে।

গবেষণা পুকুর-
এফএমবি বিভাগের অধীনে যবিপ্রবিতে রয়েছে চারটি (৪) গবেষণা পুকুর। পুকুরে মাছের প্রজনন, পোনা উৎপাদন ও চাষসহ প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। এই পুকুরগুলোতে মাৎস্যবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রমও পরিচালিত হয়।

হ্যাচারি অ্যান্ড ওয়েট ল্যাব-
যবিপ্রবিতে রয়েছে বিশ্ব মানের 'হ্যাচারি অ্যান্ড ওয়েট ল্যাব'। এটি এফএমবি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশে মাছের টেকসই উৎপাদনে কৌল তাত্ত্বিক গবেষণা, গুণগত মানের মাছের পোনা উৎপাদন, মা মাছের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিশ্বমানের গবেষণাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। এছাড়াও গুণগত মানের মাছের পোনা উৎপাদন এবং গবেষণা কাজের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট থিসিস এবং ব্যবহারিক শিক্ষা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই ল্যাব।

উচ্চ শিক্ষা ও সুযোগ-সুবিধা-
যবিপ্রবিতে গ্রাজুয়েট শেষ করে এফএমবি বিভাগ থেকেই মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়াও মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিদেশে মাস্টার্স ও পিএইচডি করারও সুযোগ রয়েছে। মাৎস্যাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএসে রয়েছে মৎস্য কৌটা। এই কৌটায় মৎস্য ক্যাডার হওয়া যায়। দেশের মৎস্য বিভাগ ও বিভিন্ন সংস্থার অধীনে বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রজেক্টে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ব্যাংক, এনজিওসহ প্রভৃতিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

এফএমবি বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করে এ পর্যন্ত ছয় (৬) জন শিক্ষার্থী বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। একাডেমিক পড়াশোনা ও গবেষণায় এফএমবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক, এনএসটি ফেলোশিপ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন।

যবিপ্রবির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন স্যারের মতে ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স হলো যবিপ্রবির একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগ। আত্মনির্ভরশীল বা স্বনির্ভর ও উদ্যোক্তা হতে একজন শিক্ষার্থীর জন্য এফএমবি বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence