প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে এনটিআরসিএ-মন্ত্রণালয়ের সভায় যে সিদ্ধান্ত হলো
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৪ PM
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান, সহকারী প্রধান নিয়োগ নিয়ে সভা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সভায় একটি কর্মশালা আয়োজনের পর এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে শুরু হওয়া এ সভা সাড়ে ৪টায় শেষ হয়। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন সভাপতিত্ব করেন।
সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান, এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, যুগ্মসচিব (মাধ্যমিক-২) মো. হেলালুজ্জামান সরকার, উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-৩) সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলী, উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১), হুরে জান্নাত, এনটিআরসিএ পরিচালক (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান) তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পিআইইউ) প্রকৌ. মো. মাকসুদুর রহমান এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে নিয়োগ সংক্রান্ত যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ খসড়াসহ প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে একটি কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কর্মশালার পরই খসড়া চূড়ান্ত করে নীতিমালা জারি করা হতে পারে।’
খসড়ায় কোনো পরিবর্তন আসছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আজকের সভায় খসড়ায় কোনো পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। কর্মশালায় এ বিষয়ে মতামত আসতে পারে। এছাড়া এ বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডই মূলত সবকিছু চূড়ান্ত করবে।’
প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ সংক্রান্ত খসড়ায় যা আছে
খসড়া অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপারিনটেনডেন্ট ও সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট প্রধান পদে নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রম পরিচালনা করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি)। সর্বশেষ জারিকৃত এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শূন্য পদের চাহিদা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে এনটিআরসির কাছে পাঠাতে হবে।
শূন্য পদের চাহিদা যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান পদে নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করা হবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর বণ্টন এবং সময়সূচি নির্ধারণ করবে এনটিআরসি। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে প্রার্থীদের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর অর্জন করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পদভিত্তিক শূন্য পদের তিন গুণ সংখ্যক প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে।
মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে শূন্য পদের সমসংখ্যক প্রার্থীর একটি প্যানেল তালিকা প্রস্তুত করা হবে। সব পরীক্ষার ফলাফল ও কৃতকার্যতা নির্ধারণে এনটিআরসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খসড়া পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচিত প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে একজন করে প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করা হবে। কোনো প্রার্থী শূন্য পদের চাহিদাজনিত বা প্রাতিষ্ঠানিক কারণে যোগদান করতে না পারলে, মেধাক্রম অনুযায়ী প্যানেল তালিকার পরবর্তী প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ দেওয়া হবে।
এনটিআরসি নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তা অবহিত করবে। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে নির্ধারিত ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিকে এক মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র প্রদান করতে হবে।
তবে জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলে কোনো প্রার্থী নিয়োগ সুপারিশের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। এছাড়া আদালতে বিচারাধীন কোনো ফৌজদারি মামলায় সংশ্লিষ্ট থাকলেও প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে বলে খসড়া পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।