নুরের দল: খসড়ায় দুই নাম, স্লোগান চূড়ান্ত

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর  © ফাইল ছবি

জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরর নতুন রাজনৈতিক দলটি চলতি মাসেই শেষের দিকে গঠন চূড়ান্ত হবে। দলটির লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেয়া।

তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি দলের নাম। ‘গণ অধিকার পরিষদ’ অথবা ‘বাংলাদেশ অধিকার পার্টি’ এই দুটি সম্ভাব্য নাম হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে। ইতোমধ্যে দলের স্লোগান হিসেবে ‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গত বছর ফেসবুক লাইভে এসে প্রথম এই দল গঠনের বিষয়টি জানান সাবেক ভিপি নুর। 

নতুন দলের নাম সম্পর্কে নুরুল হক নুর বলেন, 'গণঅধিকার পার্টি, গ্রিন পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ বিভিন্ন নাম আলোচনায় আছে। তবে আমাদের অন্যান্য সংগঠনে অধিকার শব্দটি আছে তাই চাচ্ছি এই শব্দটাকে প্রাধান্য দেওয়ার। ইতোমধ্যেই ‘জনতার অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ নামে একটি স্লোগান তৈরি করেছি।'

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনার ব্যাপারে এর আগে নুরুল হক নুর বলেন, গত মার্চ মাসে আমাদের রাজনৈতিক দল ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু মোদিবিরোধী আন্দোলন এবং আমাদের বেশকিছু সহযোদ্ধাকে গ্রেফতারের কারণে আমরা একটি চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। এখন রাজনৈতিক দল গঠনের আগে অন্যান্য যে কাজ আছে সেগুলো গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।  আমাদের নিজেদের গণ্ডির বাইরেও দেশের যে সব মানুষ আইনের শাসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এসব বিষয়ে কাজ করছেন, তাদেরকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। বলা চলে আমাদের রাজনৈতিক দল গঠনের যে সব কাজ আছে সেগুলো শেষ পর্যায়ে। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে এ মাসের শেষেই আমরা সেটি ঘোষণা করতে চাচ্ছি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই ছাত্রদের নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুবকদের নিয়ে যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক অধিকার পরিষদ, প্রবাসীদের নিয়ে প্রবাসী অধিকার পরিষদ, সর্বশেষ আমরা পেশাজীবীদের নিয়ে পেশাজীবী অধিকার পরিষদ গঠন করেছি। আরেকটা অঙ্গ-সংগঠন ‘নারী অধিকার পরিষদ’ গঠনের প্রক্রিয়া চলমান আছে।

এর আগে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাকসুর সাবেক এ নেতা বলেন, আমাদের উত্থানটাই বলতে গেলে একটা চমক এর মধ্য দিয়ে। কারণ সাধারণ ছাত্রদের কোটা সংস্কারের যে দাবি ছিল সেই দাবিকে কেন্দ্র করে আমাদের উত্থান। আর এ দাবি আদায়ে নানা নির্যাতন, নিপীড়ন, বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েও দাবি আদায়ের আন্দোলকে সফল করতে হয়েছে। এরপর ডাকসু নির্বাচন এবং গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে আমাদের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, দল ঘোষণার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই সারা দেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করা হবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আসন্ন নতুন দলের প্রধান করার কথা থাকলেও তিনি দলীয় প্রধান হতে রাজি হননি বলে জানা গেছে। তবে তিনি দলের সঙ্গে থাকবেন। 

দলীয় প্রধান হওয়ার বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমার সেই বয়স নেই একটি দলের যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার। একটি দল করতে হলে সারা দেশে ছোটাছুটি করতে হবে, যার প্রতিপক্ষ হলো একটি ফ্যাসিস্ট সরকার।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদ নতুন দলের সাথে যুক্ত হবে বলেও আগেই জানা গেছে। ওই পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক দল গঠনে তার একমতের বিষয়টি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক। এরপর ২০১৯ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ