কে হচ্ছেন হেফাজতের পরবর্তী আমির
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১২ AM , আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১২ AM
দেশের ‘অরাজনৈতিক সংগঠন’ হেফাজতে ইসলামের নেতা নির্বাচন নিয়ে কওমি মহলে এর আগে ভিন্ন মতাদর্শী থাকলেও এবার শীর্ষ কওমি আলেম ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর তা আরো দানা বেঁধেছে। হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে ফের দুই শীর্ষ নেতার অনুসারীদের ফাটল স্পষ্ট হলেও আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এর ফলে কওমি মতাদর্শীরা দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকের ধারণা, আল্লামা শফীর মৃত্যু পরবর্তী নেতা নির্বাচন নিয়ে কওমিদের কোন্দল আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কওমি নেতা বলেন, ‘এতদিন কওমি সমাজে আল্লামা আহমদ শফী ও তাঁর অনুসারীদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য থাকলেও তাঁর মৃত্যুর পরপরই পাল্টে যাচ্ছে সেই চিত্র। আল্লামা শফীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালনায় কিছু পরিবর্তন এনেছেন শূরা সদস্যরা। এতে কর্তৃত্ব বেড়েছে জুনায়েদ বাবুনগরী ও তাঁর অনুসারীদের।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারীরা চাইবেন দ্রুততার সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম, বেফাকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিতে। তবে আল্লামা শফীর দীর্ঘদিনের বলয়ে ফাটল ধরাতে কষ্টকর হবে বাবুনগরী ও তাঁর অনুসারীদের। কওমি সমাজে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কওমিদের কোন্দল মারাত্মক আকার ধারণ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
জানা গেছে, আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর কওমি সমাজে নেতৃত্ব সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আল্লামা শফী শুধু হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক নন, সর্বোচ্চ কওমি শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল অ্যারাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক), দাওরায়ে হাদিসের সরকারি স্বীকৃতি নেওয়ার জন্য গঠিত শিক্ষা বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলামের আমিরসহ আড়াই শতাধিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন।
আল্লামা শফী পরবর্তী এসব পদে আসতে এরই মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে কওমি শীর্ষ নেতাদের মধ্যে। আল্লামা শফীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা সদস্যরা বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে পাঁচজন শূরা সদস্যকে নতুন করে নিয়োগ দান ছাড়াও মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য তিন সদস্যের একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষা সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে। এতে করে মাদ্রাসায় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তী আমির নির্বাচনেও দ্রুত বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। বর্তমান হেফাজতে ইসলামের কমিটিতে আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে বলে আভাস মিলছে। এ ছাড়া বেফাক, হাইয়াতুল উলইয়াসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এরই মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন কওমি শীর্ষ নেতারা।
একাধিক কওমি নেতা বলেন, এতদিন একক হাতে হেফাজতে ইসলাম, বেফাক ও হাইয়াতুল উলইয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন আল্লামা শফী। তাই সব কমিটিতে তাঁর অনুসারীদের শক্তশালী বলয় রয়েছে। আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর অন্যরা চাইবে সেসব সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নিতে। যদিও এটা তাদের জন্য সহজ কাজ হবে না।