পরিবার পেল ‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম’ চিরকুটসহ পাওয়া সেই শিশু
- দিনাজপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩০ PM
অবশেষে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মায়ের রেখে যাওয়া নবজাতক শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে অরবিন্দ শিশু হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে লালন-পালন করার জন্য একটি সন্তানহীন (সরকারি কর্মকতা) পরিবারের হাতে নবজাতককে তুলে দেন। উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিঃসন্তান দম্পতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৬ নভেম্বর দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেডে এক নবজাতক কন্যসন্তানকে রেখে গেছেন যান মা। এরপর থেকে নবজাতকটি হাসপাতালের পেডিয়ার্টিক ওয়ার্ডে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলে। পরবর্তী সময়ে সমস্যা দেখা দিলে অরবিন্দ শিশু হাসপাতালে আইসিইউ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসা চলাকালীন শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠে।
অরবিন্দ হাসপাতালের সেক্রেটারি শামীম কবীর জানান, অরবিন্দ শিশু হাসপাতালের আইসিইউ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎস ও নার্সরা দিনরাত মায়ের সেবা দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে তুলেন।
হস্তান্তর অনুষ্ঠনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, গত ৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ওই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে ইনছুয়ারা, শাহিনুর, আলাদিপুর, ফুলবাড়ী। আর বাজারের ব্যাগে নবজাতকের মায়ের রেখে যাওয়া চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমি মুসলিম। আমি একজন হতভাগী। পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্মতারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৫ (মঙ্গলবার)। এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ...।
বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুচিকিৎসার জন্য অনুরোধ করে পত্র দেওয়া হয়। পরে তারা শিশুটিকে সুস্থ করে তুলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বর উপজলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় শিশুটিকে লালন-পালন করার জন্য পরিচর্যাকারীর জন্য ঘোষণা দিলে ১৫টি আবেদন পড়ে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে নওগাঁ জেলায় এক নিঃসন্তান দম্পতিকে হস্তান্তর করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটিকে লালন-পালন করার জন্য এবং চিকিৎসা প্রদানে অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল যে অবদান রেখেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই এই শিশুটি একদিন আলোকিত মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির নিবেদিত প্রাণ হবে।’
আইনের বিধান অনুযায়ী ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিন্ধান্ত অনুযায়ী ১৫টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতা গোলাম আযম।