লালনের তিরোধান দিবস জাতীয়ভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত, জানালেন ফারুকী

লালনের তিরোধান দিবস জাতীয়ভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত, জানালেন ফারুকী
লালনের তিরোধান দিবস জাতীয়ভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত, জানালেন ফারুকী  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সংগীতের অন্যতম পথিকৃৎ লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘একটা দেশকে শারীরিকভাবে উপনিবেশ বানানোর আগে তাকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দখলে নিতে হয়। তাকে বোঝানো হয়, তার কোনো সংস্কৃতি নেই, থাকলেও সেটি নিম্নমানের বা “লো কালচার।’

ফারুকী উল্লেখ করেন, লালনের গান কিংবা রক মিউজিকের মতো অনেক উচ্চমানের শিল্পকর্মকে অতীতে উপনিবেশিক ও আধিপত্যবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে ‘ফোক’ বা ‘অপসংস্কৃতি’ হিসেবে খাটো করে দেখা হয়েছে। এর ফলে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বহু সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্য বঞ্চিত হয়েছে।

আজকের (২৮ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠকে লালনের তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফারুকী বলেন, ‘চব্বিশ-পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো জনগণের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক মানের সংস্কৃতি উদযাপন করা। এটি জাতিকে আত্মবিশ্বাসী ও মর্যাদাপূর্ণ করে তোলে এবং বিশ্বে আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে প্রতিষ্ঠিত করে।’

তিনি আরও জানান, এস এম সুলতানের জন্মদিনকে জাতীয় দিবসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বড় ফেনোমেনা—যেমন হুমায়ূন আহমেদ ও দেশি রক আইকনদের উদযাপন নিয়েও কথা হয়েছে।

পোস্টের শেষে ফারুকী লেখেন, ‘লালনকে জাতীয়ভাবে উদযাপন করে আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের বাইরে তাকানো শুরু করলাম। এটি কেবল শুরু। সমসাময়িক মাস্টার আর্টিস্টদেরও রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করা হবে। ধরুন আইয়ুব বাচ্চু—যার গান বাজে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। এমন একজন শিল্পী যেকোনো জাতির জন্য গর্বের। জন্মদিন উদযাপনে আর কত বছর লাগবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।’

উল্লেখ্য, ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার আখড়ায় লালন সাঁই প্রয়াত হন। দিনটি এখন থেকে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ