‘নির্যাতনের বিচার চাইব নাকি খেয়েপরে বেঁচে থাকব?’

ভুক্তভোগী শিশু
ভুক্তভোগী শিশু  © সংগৃহীত

‘বাবা হত্যার বিচার চাইব? নাকি আমার ওপর হওয়া অমানবিক নির্যাতনের, সেটা এখানো বুঝে উঠতে পারছি না! আমার মায়ের কোলে দেড় মাসের একটা ছোট শিশু। আমিও ক্লাস সেভেনে পড়ি। বড় কোনো ভাই নেই। কীভাবে আমার সংসার চলবে, এটা জানি না। নির্যাতনের বিচার চাইব নাকি খেয়েপরে বেঁচে থাকব, সেই নিশ্চয়তাও পাচ্ছি না।’

এমন আকুতি জানিয়ে প্রশ্ন রেখেছে বরগুনা পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিহত মন্টু চন্দ্র দাসের ভুক্তভোগী শিশু মেয়ে।

গত ৪ মার্চ অপহরণের শিকার হয় মেয়েটি। এরপর ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার বাবা মন্ট্র চন্দ্র দাস। তারও ছয় দিনের মাথায় ১১ মার্চ রাতে নিজ বসতবাড়ির একটি ঝোঁপ থেকে মন্টুর কাদামাখা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মন্টুর স্বজন ও পুলিশের ধারণা, ১১ মার্চ রাতের কোনো একসময় মন্টুর মৃত্যু হয়েছে। এদিন রাত ১টার দিকে স্বজনরা মন্টুর মরদেহ দেখতে পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

নিহতের স্বজনরা জানান, নির্ধারিত সময়ে বাড়িতে না আসায় মন্টুর মোবাইল ফোনে কল দিলে বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ে মোবাইলের আওয়াজ শুনতে পান তারা। পরে সেখানে গিয়ে মন্টুর মরদেহ দেখতে পান। এ সময় মন্টুর পরনের কাপড় ছিল ভেজা, হাতে কামড়ের দাগ ও সারা শরীরে কাদা মাখা ছিল। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, শিশু মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা বলেন, গত ৪ মার্চ রাতে শিশুটি প্রাইভেট শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাশের বাড়ির বখাটে তরুণ সৃজিত চন্দ্র রায়। এ সময় তার সঙ্গে এক সহযোগীও ছিল। পরে তাদের বাসার পেছনে একটি বাঁশঝাড়ে তাকে রাতভর ধর্ষণ করে সৃজিত চন্দ্র রায়।

স্থানীয়রা জানান, শিশুর ভাষ্য অনুযায়ী, সৃজিত তার বাড়ির পেছনের এক ঝোপের মধ্যে হাত-পায়ে রশি বেঁধে তাকে আটকে রাখে। এক রাতে তিনবার ধর্ষণ করা হয় শিশুটিকে। পরের দিন সকালে মেয়েটিকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় সৃজিত।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে শনিবার বেলা ১টার দিকে বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার ধর্ষণের মামলা করা পর অভিযুক্ত সৃজিতকে গ্রেপ্তার করা হয় ৫ মার্চ। তখন থেকে সে কারাগারে আছে। আমরা শিশুটির বাবা মন্টু চন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার করি ১১ মার্চ। এ বিষয়েও অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা করা হয়।

ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না, প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আর মন্টুর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

এর আগে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মন্টুর মরদেহের সুরতহাল করেছি। প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence