বিদেশে উচ্চশিক্ষার কথা বলে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা  © সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ায় ভালো চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করার প্রলোভন দেখিয়ে জামালপুরের পাঁচ যুবকের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে একটি চক্র। উচ্চ সুদে ঋণের টাকা দিয়েও দক্ষিণ কোরিয়া যেতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরাসহ তাদের পরিবার।

এ ঘটনায় এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিস ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা না পেয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকালে উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের বড়বাড়ি এলাকায় চক্রের এক প্রতারক সদস্যের বাড়িতেই ওই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

এ সময় ভুক্তভোগীদের মধ্যে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান হাবিবুর রহমান বাবু, সুলতান মাহমুদ, নজরুল ইসলাম, মমিন মিয়া ও মর্জিনা বেগমসহ অন্যরা।

মাদারগঞ্জ উপজেলার চর গুজামানিকা এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার, লেবু মিয়ার ছেলে সুলতান মাহমুদের কাছ থেকে ১৫ লাখ, মেলান্দহ উপজেলার আদ্রা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে রবিন মিয়ার কাছ থেকে ১২ লাখসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০২৩ সালে আদ্রা বড়বাড়ি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল ওরুফে বাদল মাস্টার তার ছেলে রাগিব ইয়াসির সিনজন, পুত্রবধূ রোকেয়া আফরোজ প্রাপ্তি, ভাই রুবেল মিয়া ও স্ত্রী করোনা বেগমের যোগসাজশে স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া কথা বলে আমাদের পাঁচজনের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নেন। পরে আমাদের মধ্য থেকে একজনকে ঢাকায় অবস্থিত কোরিয়ান দূতাবাসে পাঠাই। দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, আমাদের সব কাগজপত্র ভুয়া। পরে আমরা হতাশ হয়ে ফিরে আসি।

তারা আরও বলেন, এমন প্রতারণার বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীসহ আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যসহ কয়েক দফা সালিস করি। একপর্যায়ে আমাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় নিয়ে তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাদের নম্বরে ফোন করলে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলাসহ নানা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়।এ নিয়ে আমরা মেলান্দহ থানায়ও অভিযোগ জমা দিয়েছি।

ভুক্তভোগী একজনের মা মর্জিনা বেগম বলেন, গরু বিক্রিসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উচ্চসুদে ঋণ নিয়ে আমি টাকা দিয়েছি। এখন পথে বসে গেছি। জমিজমা বিক্রি করেও সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আমরা আজ নিরুপায়। আমাদের টাকা ফিরে চাই। পাওনাদারেরা আমাদের ওপর টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। পরে প্রতারকদের বিচার ও আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে তাদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনার তদন্তও করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ