শয়তান সম্পর্কে ইসলামে যা বলা হয়েছে

  © ফাইল ফটো

ইসলাম ধর্মে শয়তানকে মানবজাতির সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য সবসময় তৎপর থাকে। ধর্মগ্রন্থ কোরআন ও হাদিসে শয়তানকে ইবলিস নামেও অভিহিত করা হয়েছে এবং তার ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে শুভ ও অশুভ শক্তির ধারণা থাকলেও ইসলাম ধর্মে শয়তানের কার্যক্রমকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শয়তান শুধুমাত্র মানুষকে পথভ্রষ্ট করে না, বরং তার প্রতারণার জালে ফেলে তাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

শয়তানের পরিচয়

পবিত্র কোরআন-হাদিসে শয়তানকে প্রধানত দুটি নামে চিহ্নিত করা হয়েছে- শয়তান ও ইবলিস। আরবি ভাষাবিদরা বলেন, ইবলিস শব্দটি গ্রিক ‘ডায়াবোলস’ Diabolos শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে। অর্থ কুৎসা রচনাকারী, বিশ্বাসঘাতক ও মিথ্যুক। ইংরেজি ডেবিল শব্দটিও একই উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে।

শয়তান শব্দটি আরবি ‘শাতানুন’ শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ কূপ থেকে পানি তোলার লম্বা রশি। যেহেতু শয়তান তার প্রতারণার মাধ্যমে মানুষকে মন্দ পথে টেনে নিয়ে যায়, তাই তাকে শয়তান বলা হয়।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘ইবলিসের নাম ছিল আজাজিল। সে ছিল ফেরেশতাদের মধ্যেও সম্মানী। তার চারটি পাখা।’ তিনি অপর বর্ণনায় বলেন, ‘ইবলিস ছিল ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহতায়ালার নাফরমানি করার কারণে তার ক্রোধে পরে শয়তান হয়ে যায়।’ আবু জায়েদ, হাসান, কাতাদাহ প্রমুখ বলেন, ইবলিস জিন জাতির আদি পিতা, যেমন হজরত আদম (আ) মানবজাতির আদি পিতা। তবে সে ফেরেশতা নয়। গ্রিক ভাষায় তার নাম আজাজিল, আর আরবি ভাষায় হারিস। -তাফসিরে কুরতুবি : ১/২৩৬

কোরআন মাজিদে শয়তানের বর্ণনা
কোরআন মাজিদে শয়তানকে মানবজাতির শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে তার ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরআনে কারিমে শয়তানকে ইবলিস নামে ৯ স্থানে ১১ বার উল্লেখ করা হয়েছে। আর কোরআনে কারিমের প্রায় ৮৮টি আয়াতে শয়তান শব্দটি এক ও বহু বচনে ব্যবহৃত হয়েছে।

শয়তানের ব্যাপারে কোরআন মাজিদের মৌলিক বক্তব্য হলো-

জিনদের অন্তর্ভুক্ত: শয়তান প্রকৃত পক্ষে ফেরেশতা নয়, জিন ছিল। ইরশাদ হয়েছে, ‘তখন তারা সবাই সিজদা করল ইবলিস ছাড়া। সে জিনদের একজন, সে তার প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল।’ -সূরা কাহাফ : ৫০

আল্লাহর অবাধ্য: ইরশাদ হয়েছে, ‘তখন ফেরেশতারা সবাই সিজদাবনত হলো কেবল ইবলিস ছাড়া। সে অহংকার করল এবং অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ -সুরা সোয়াদ : ৭৩-৭৪

শয়তান মানুষের শত্রু: ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! আমি কি তোমাদের নির্দেশ দিইনি যে তোমরা শয়তানের দাসত্ব করো না। কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু?’ -সুরা ইয়াসিন : ৬০

শয়তান মানুষকে প্রতারিত করে: প্রতারিত করার মাধ্যমে শয়তান মানুষকে মন্দ কাজে উৎসাহিত করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সে বলল, আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব। আমি তাদের পথভ্রষ্ট করবই; তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করবই।’ -সুরা নিসা : ১১৮-১১৯

শয়তানের রয়েছে মানব সহযোগী: মানব সমাজে শয়তানের কিছু সহযোগী আছে। আর তারা পরস্পরকে সহযোগিতা করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মুমিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা তাগুতের পথে যুদ্ধ করে। সুতরাং তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো; শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল।’ -সুরা নিসা : ৭৬


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence