অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই সবচেয়ে বড় সংস্কার: এমরান সালেহ
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২২ PM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৫ PM
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সংস্কার। এটি টেকসই হতে হবে এবং একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে হবে।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন সেমিনারটির আয়োজন করে। সেমিনার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্স-সংলগ্ন এলাকায় নিমগাছ রোপণ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘আজকে বিএনপিও সংস্কার চায়। আমরা ২০১৬ সাল থেকেই রাষ্ট্রের কাঠামো মেরামতের কথা বলছি। যারা এখন সংস্কারের কথা বলছেন, তারা তখন চুপ ছিলেন। বিএনপি একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা দিয়েছেন, যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব।’
আরও পড়ুন: দূর-দূরান্তে মাইক বসিয়ে মানুষকে ওয়াজ শুনতে বাধ্য করার অধিকার কে দিয়েছে, প্রশ্ন আজহারীর
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এখন সংকটময় মুহূর্ত পার করছে। এ অবস্থায় সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। অতি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই এ সংকট সমাধানের একমাত্র পথ। বিএনপি এখনো ক্ষমতায় আসিনি। আমরা এখনো বিরোধীদলে রয়েছি। আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদের প্রতি আস্থা রাখলে এবং ভোট দিলে আমরা অবশ্যই ক্ষমতায় আসব। তবে, এ পথ অত্যন্ত জটিল ও কঠিন। বর্তমান সময়ে বিএনপির ওপর নানা চাপ প্রয়োগের অপচেষ্টা চলছে। বিভিন্ন দোষারোপের মাধ্যমে আমাদের নীতিনিষ্ঠ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে বিএনপি একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল, যেখানে ভালো-মন্দ উভয় দিক থাকতে পারে।’
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন, কোষাধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সরদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সরকার। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরাও অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে বক্তারা জিয়াউর রহমানের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তার নেতৃত্ব এবং দেশের জন্য অবদানের কথা স্মরণ করেন। বক্তারা তরুণ প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও নৈতিকতার ভিত্তিতে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রাজনীতিতে যেভাবে উত্থান হয় জিয়াউর রহমানের
অনুষ্ঠানে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘বাকৃবি একসময় আওয়ামী লীগের দুঃশাসন এবং ছাত্রলীগের প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কেন্দ্রস্থল ছিল। আমরা যখন এই ক্যাম্পাসে এসেছিলাম, তখন হলগুলোতে টিকে থাকতে বড় ভাইদের দারস্থ হতে হতো। ২০০৫ সালের পর থেকে আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসন প্রত্যক্ষ করেছি। বিগত ১৭ বছরে রাজনীতি যে কতটা কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং পেশা হতে পারে, তা আমরা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুধাবন করি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ এবং চেতনা আমার রক্তের প্রতিটি কণায় প্রবাহিত। তার নীতি ও নেতৃত্ব আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে।’
তিনি আরও বলেন, সংগঠনের কঠিন সময়ে যারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যান, তাদের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবনী পাঠ করা উচিত। তার সংগ্রামী জীবন থেকে তারা নতুনভাবে অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা পাবে।