থানা থেকে আসামি যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

 মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা
মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা  © সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাইয়ুম উদ্দীন চৌধুরী।

পুলিশ ও থানা সূত্রে জানা যায়, থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি তরিকুল ইসলাম শ্রীনগর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। মারামারির ঘটনায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর শ্রীনগর থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি নেওয়ার জন্য মুন্সিগঞ্জ আদালত থেকে পুলিশকে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন তরিকুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানাহাজতে রাখে। রাত ১০টার দিকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আসামি তরিকুলকে হাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'তরিকুলকে গ্রেফতারেরে পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে প্রথমে থানায় আসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মৃধা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমদাদুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি আশরাফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। তারা তরিকুলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন। পুলিশ তাতে রাজি না হলে হাফিজুল ইসলাম খান সন্ধ্যা সাতটার দিকে অন্য নেতাকর্মীদের থানায় রেখে তিনি বেরিয়ে যান।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ২০০ নেতাকর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে তারা বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে জোর করে ওসি ও সার্কেল এসপির সামনে থেকে আসামি তরিকুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান তারা।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি থানায় যাইনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো একটি পক্ষ মিথ্যা দোষারোপ করার চেষ্টা করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘থানা থেকে কোনো আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এমন হতে পারে, যে আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, সে রাস্তা থেকে পালিয়ে গেছে। এখন এটিকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার নাটক সাজানো হচ্ছে।'

পালিয়ে যাওয়া ওই আসামিকে ধরতে তিনি তার লোকজনদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে কাজে লাগিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার (ওসি) মো. কাইয়ুম উদ্দীন চৌধুরি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা  থানায় এসে গ্রেফতার ওই যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি এবং বাধা প্রদান করি। কিন্তু তারা হট্টগোল করে পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।'

তিনি আরও বলেন, 'ছিনিয়ে নেওয়া ওই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সেইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' 


সর্বশেষ সংবাদ