কলকাতার পথেই হাঁটল ত্রিপুরা, বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করবে না বলে ঘোষণা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ AM , আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ PM
বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার আইএলএস হাসপাতাল। এমনকি এই হাসপাতালে বাংলাদেশিদের জন্য হেল্প ডেস্কও বন্ধ করা হয়েছে। আগরতলায় অবস্থিত আইএলএস হাসপাতালটি একটি মাল্টি-সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এর আগে, বাংলাদেশের কোনও রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা ত্রিপুরার আইএলএস হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে আইএলএস হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা দেন।’
আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার গৌতম হাজারিকা বলেন, 'বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করানো বন্ধ করা নিয়ে স্থানীয়রা যে দাবি তুলেছেন তার সঙ্গে আমরা একমত। আখাউড়া চেকপোস্টে ও আইএলএস হাসপাতালে তাদের জন্য যে হেল্প ডেস্ক ছিল সেটিও এবার বন্ধ করা হলো। বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে ও ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
কলকাতার জে এন রায় হাসপাতালের কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত বলেন, 'হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই মর্মে নোটিশ জারি করেছে যে এখন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জে এন রায় হাসপাতাল কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করবে না এবং চিকিৎসাসেবা দেবে না। বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতের প্রতি যে অসম্মান প্রদর্শন করেছে, তার জেরেই নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।'
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বর্তমানে সেখানে ব্যাপকভাবে ভারতবিদ্বেষ দেখতে পাচ্ছি। আমরা আশা করছি অন্যান্য হাসপাতালগুলোও বাংলাদেশের রোগীদের ব্যাপারে একই সিদ্ধান্তে আসবে।’
এদিকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়ে হাসপাতালগুলোর সিদ্ধান্তের প্রতি একমত জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, 'বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালগুলো যে বার্তা দিয়েছে তাতে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। গোটা ভারতের উচিত বাংলাদেশকে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া।'
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। সম্প্রতি সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের জেরে আরও তিক্ত হয়েছে প্রতিবেশী দু’দেশের সম্পর্ক।