জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের পুনর্বহালের দাবি

পদ-বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোটের মাননবন্ধন
পদ-বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোটের মাননবন্ধন  © সংগৃহীত

সরকারের পটভূমি পরিবর্তনের পর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোর করে পদত্যাগ, অপসারণ, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক ছুটি নিতে বাধ্য করা শিক্ষকদের ফের পদে বহালের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মস্থলে যেতে বাধা পাওয়া অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এসব দাবি জানান পদ-বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোট।

জোটের আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের অপমান-অপদস্থ, হেনস্তা ও মারধর করে জোরপূর্বক পদত্যাগ, অপসারণ, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক ছুটি, কর্মস্থলে বাধাগ্রস্ত ও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক পদবঞ্চিত হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। দেশজুড়ে এমন ঘটনায় সত্যিই আমরা বিস্মিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর সেখানে আজ আমরা নিগৃহীত, নির্যাতিত। দেশের শিশুদের আগামী দিনের সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ব্রত নিয়ে সততা, নিষ্ঠা ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে স্বার্থলোভী লোকদের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছি আমরা। স্বার্থান্বেষীরা এই সংকটময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে, দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে নিয়ে এমন নিষ্ঠুর নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছে যা অস্বাভাবিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।’

আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাক্রম সংশোধন-শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধিসহ একগুচ্ছ দাবিতে মানববন্ধন

পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোটের এই আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘এই অনৈতিক, অন্যায় ও মবজাস্টিসের মত বর্বরতার কবলে পড়েছি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বল্প বেতনে নিয়োজিত শিক্ষকেরা। ফলে কেউ আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কেউ চাকুরি হারিয়ে, পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউ বা ঘরবাড়ি ছেড়ে দূরদূরান্তে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই হয়রানি থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই, নিরাপদে বাঁচতে চাই।’

এ সময় পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোটের সমস্যা সমাধানে ৫টি প্রস্তাব জানানো হয়। প্রস্তাবগুলো হলো:

* পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের এমপিও থেকে নাম কর্তন না করে বেতন-ভাতাদি চালু রাখার ব্যবস্থা করা; 
* পদ-বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ অপসারণ, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক ছুটি বাতিল ঘোষণা করা; 
* সসম্মানে স্বপদে বহাল করে কর্মস্থলের নিরাপত্তা বিধান করা; 
* অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বার্থলোভী ও শৃঙ্খলাভঙ্গকারীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা;
* পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের সমমানের এমপিওভুক্ত স্কুলে শূন্যপদে বদলির ব্যবস্থা করা।


সর্বশেষ সংবাদ