সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া ইসলামে সন্দেহ করা, কাউকে শাস্তি দেওয়া অপরাধ: আহমাদুল্লাহ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২০ AM , আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৭ AM
ইসলামের জীবনবিধান এবং অপরাধী সন্দেহে কাউকে শাস্তি দেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিশিষ্ট ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি জানিয়েছেন, অপরাধী সন্দেহে কাউকে শাস্তি দেওয়া অপরাধ, এটা আমরা সবাই জানি। তবে ইসলাম এর চেয়েও একধাপ এগিয়ে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, অপরাধী সন্দেহে কাউকে শাস্তি দেওয়া অপরাধ, এটা আমরা সবাই জানি। তবে ইসলাম এর চেয়েও একধাপ এগিয়ে। ইসলাম আমাদেরকে যে জীবনবিধান দিয়েছে, সেখানে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কাউকে নিজে নিজে শাস্তি দেওয়া তো দূরে থাক, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ব্যতীত কারও ব্যাপারে সন্দেহ করাই অপরাধ। সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া কেউ কারও প্রতি মন্দ ধারণাও করতে পারবে না, ইসলামের দৃষ্টিতে এটা মানুষের অধিকার।
তিনি আরও লিখেন, এই পৃথিবীতে সন্দেহ থেকে বহু অন্যায়ের জন্ম হয়। গণপিটুনি, দাঙ্গা, মারামারি, পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের মতো অনেক অপরাধের মূলে থাকে সন্দেহ। কিন্তু সন্দেহের কারণে কাউকে শাস্তি দেয়ার বিধান পৃথিবীর কোনো আদালতের নেই। অথচ ইসলাম চোদ্দশ বছর আগে সন্দেহকে অন্যায় সাব্যস্ত করে সন্দেহ থেকে সৃষ্ট সকল অন্যায়ের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেছেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ। (সূরা হুজরাত আয়াত ১২)
পুরুষের মনোজগতে কোনো নারী ধর্ষিত হলে সেটাকে অপরাধ বলার ক্ষমতা কোনো আদালতের নেই। কারণ সেটা সাব্যস্ত করা সম্ভব নয়-এ কথা উল্লেখ করে আহমাদুল্লাহ লিখেন, একজন নারীর জন্য এরচেয়ে বেদনার, লাঞ্ছনার, গ্লানির কোনো বিষয় আছে বলে মনে হয় না। তারপরও কোনো সমাজে সেটা অপরাধ নয়।
কিন্তু ইসলাম এটাকে ভয়ংকর অপরাধ বলেছে। ইসলামে শারীরিক ধর্ষণ যেমন অপরাধ, কল্পনার জগতে ধর্ষণও অপরাধ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি চোখের কুদৃষ্টি এবং মনের মন্দ কল্পনাকে ব্যভিচার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। (বুখারী-মুসলিম)
পোস্টে তিনি লেখেন, সাধারণ সমাজ একজন নারীর শারীরিক নিরাপত্তার কথা বললেও তার মনোজগতে ধর্ষিত না হওয়ার কথা বলে না। ইসলাম সেটা বলে। এখানেই আল্লাহর আইন আর মানবসৃষ্ট আইনের মৌলিক পার্থক্য। এটাই ইসলামী শরিয়াহর সৌন্দর্য। মানব সৃষ্ট আইনে মানুষের যেসব অধিকার সংরক্ষণ করতে পারেনি, ইসলামে সেসবও সংরক্ষণের করেছে।
দিনশেষে আল্লাহর দেওয়া শরিয়াতেই রয়েছে মানবজাতির সামগ্রিক কল্যাণ। বিষয়টি আমরা যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারব ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।