জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে নিহতদের ক্ষতিপূরণ দাবিতে রিটের শুনানি ফের আগামী সপ্তাহে 

হাইকোর্ট
হাইকোর্ট  © ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের  দাবিতে দায়ের করা রিটের শুনানি ফের আগামী সপ্তাহে। ৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) হাইকোর্টের বিচারপতি  ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার। তাকে সহযোগিতা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি) ও এডভোকেট খায়রুল বাশার। 

শুনানির এক পর্যায়ে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে জুলাই -আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা আগামী সপ্তাহে জানাতে বলেন ও শুনানির জন্য ফের আগামী সপ্তাহ নির্ধারণ করে। 

আরও পড়ুনঃ গণভবন নিয়ে পার্থ ‘ইমোশন ভালো, তবে ইমোশনের সাথে পুনর্বাসন বেশি ভালো’

উল্লেখ্য যে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত প্রত্যেকের জন্য ১০ কোটি টাকা ও -আহত প্রত্যেকের জন্য ৫ কোটি ক্ষতিপূরণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবী রিট দায়ের করেছিলেন ।‌ এছাড়া  আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ও সংঘর্ষ নিহত এবং আহতদের বিচার নিশ্চিত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে  দাবি করা হয় রিটে। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার  বিগত ০৪ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবী রিটটি দায়ের করেন। রিটকারীররা হলেন ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার , ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি), ও এডভোকেট খায়রুল বাশার।

 রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি ও র‍‍্যাবের মহাপরিচালকে বিবাদী করা হয়েছে। 

রিটে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য যুক্তরাজ্যের আদলে একটি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে আহতদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বিবাদীরা কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা মহামান্য হাইকোর্টকে জানাতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকার কপি ফিরিস্তি করে জমা দেয়া হয়। 

আরও পড়ুনঃ বিডিআর বিদ্রোহ মামলার প্রসিকিউটরদের নিয়োগ বাতিল

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত  আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ও সংঘর্ষে  ৬৫০ প্রাণ হারিয়েছেন ও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।  তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী নিহত সহস্রাধিক। পত্রিকায় তথ্য অনুযায়ী আহতদের সংখ্যা ১৮ হাজারের অধিক।‌ এরমধ্যে চার শতাধিক মানুষ তাদের চোখ হারিয়েছেন। এর বেশিরভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ। বিবাদীদের  ব্যর্থতা ও অবহেলার কারণেই এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। 

রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবীর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়েছিল। আজ মাননীয় আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করি।  রিটের গুরুত্ব বিবেচনা করে মাননীয় আদালত ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের বিষয়ে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলেন।  আগামী সপ্তাহে ফের শুনানির জন্য আদালত সময় নির্ধারণ করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ