‘প্রত্যয়’ বাধ্যতামূলক হচ্ছে : সিপিএফ সুবিধা বাতিলে আইন সংশোধনে অর্থমন্ত্রণালয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৫:১২ PM , আপডেট: ২০ জুন ২০২৪, ০৫:১৫ PM
আগামী ১ জুলাই থেকে চালু হতে যাওয়া ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত হবেন রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে প্রত্যয় বাধ্যতামূলক করার জন্য স্বশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থার বর্তমান কর্মীরা যে প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল (সিপিএফ) সুবিধা পাচ্ছেন, আইন সংশোধন করে তা বাতিল করতে হবে। সে কাজে হাত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
‘প্রত্যয়’ কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত হবেন রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও সরকারি ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সব কমিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রত্যয়ের আওতাভুক্ত হবেন।
‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে বাতিল না হলে সেদিন থেকে সর্বাত্বক কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষকরা।
পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাংশের শিক্ষকেরা বৈষম্যের কথা বলে প্রত্যয় কর্মসূচি চালুর বিরোধিতা করে আসছিলেন। এখন মনে হয়, সেই বিরোধিতা আর করবেন না তাঁরা। কারণ, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বাধ্যতামূলক হচ্ছে।’
তবে প্রত্যয় বাধ্যতামূলক করার জন্য স্বশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থার বর্তমান কর্মীরা যে প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল (সিপিএফ) সুবিধা পাচ্ছেন, আইন সংশোধন করে তা বাতিল করতে হবে। সে কাজে হাত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় খুব কমসংখ্যক স্বশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থায় পেনশন কর্মসূচি চালু আছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই সিপিএফ ব্যবস্থা প্রযোজ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি সংস্থার ব্যতিক্রম উদাহরণ ছাড়া এ ব্যবস্থায় চাকরি শেষে পেনশন পান না কেউ, পান এককালীন আনুতোষিক।
প্রত্যয় যাঁদের জন্য প্রযোজ্য
অর্থ বিভাগের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অর্থ—৫০ শতাংশের বেশি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কোনো ব্যবসায় উদ্যোগ, কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প-বাণিজ্য–সম্পর্কিত বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান। আর স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হচ্ছে আইনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, কমিশন, সংস্থা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউশন, কাউন্সিল, একাডেমি, ট্রাস্ট, বোর্ড, ফাউন্ডেশন ইত্যাদি।
প্রত্যয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা—এই দুইয়ের মধ্যে যেটা কম, তা তাঁদের বেতন থেকে কাটা হবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে। এরপর উভয় অর্থ জমা হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে। যাঁদের ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি আছে, তাঁরা আগ্রহী হলে প্রত্যয় কর্মসূচির আওতায় আসতে পারবেন। আবার ১০ বছর চাকরি থাকা বিদ্যমান চাকরিজীবীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায়ও থেকে যেতে পারবেন।
প্রত্যয় চালু হলেও বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না। বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারী মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ দেয়। প্রত্যয় কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠান দেবে মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১০ শতাংশ। যদি কোনো কর্মচারী ৩০ বছর চাঁদা দেন, তাহলে অবসরের পর অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স থেকে ওই কর্মচারী মাসে ৬২ হাজার ৩৩০ টাকা করে পেনশন পাবেন।