পুলিশ রেগে কথা বলে কেন, শিশুর প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার যা বললেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:০৯ AM , আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:২০ AM
পুলিশ বন্ধুরা রাগ করে কথা বলে কেন? প্রশ্নটি ছোট এক শিশুর। এর জবাবেঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বললেন, পুলিশও তোমাদের মতই মানুষ। পুলিশের কাজটি আসলে অনেক কঠিন। ট্রাফিক পুলিশের কথা বললে তারা রোদ বৃষ্টির মাঝেই কাজ করেন। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার সময়ও পায় না। তাই হয়তো তাদের কথা গুলো শুনতে কঠিন লাগে।’
‘আবার থানাতেও পুলিশ সারা রাত জেগে থাকে। এ কারণেও হয়ত তাদের মেজাজ, মন মানসিকতা একটু কঠোর হয়ে যায়। মানসিক স্ট্রেসের জন্য হয়তো পুলিশ সুন্দর করে কথা বলতে পারেনা। তবে স্বাভাবিক মানুষের মতই পুলিশের ভেতরেও ভালবাসা আছে সুন্দর মন আছে।’ যোগ করেন তিনি।
‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, ভবিষ্যতের বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৩। 'ছোটরা বলবে, বড়রা শুনবেন' শীর্ষক আলোচনায় বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) শিশুদের মাঝে উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান। সেখানে এ প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। শিশু একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশকে এত ভয় পায় কেন? এ প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, যারা শান্তিপ্রিয় মানুষ, অপরাধ করি না, অন্যায় করি না তাদের জন্য পুলিশকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যেমন আমাদের শিশুরা পুলিশকে ভয় পায় না। আমাদের দেশটার আগে নাম ছিল পাকিস্তান, তার আগে ভারত, তার আগে বৃটিশদের মধ্যে ছিল। সেসময় বৃটিশরা পুলিশকে ব্যবহার করত অন্যায্য কর আদায়ের জন্য ব্যবহার করত।
সে জায়গা থেকে মানুষের মাঝে পুলিশ ভীতি তৈরি হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ভালো মানুষ তাদের জন্য ভয়ের কিছু নেই। ৭১ সালের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যারা পুলিশে আছেন তারা তো আমাদের পুলিশ। আমাদেরই আত্মীয়-স্বজন। তাই শিশুদের কখনোই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আরো পড়ুন: বাবাকে বিএনপির রোডমার্চে দেখে বিষপান ছাত্রলীগ নেতার
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য পুলিশের ভাবনা কি? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ যখন কাউকে পথে ভিক্ষা করতে দেখে তাদের জন্য বিভিন্ন এনজিও যারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়। এছাড়া, পুলিশের একটা ইউনিট আছে যারা হারিয়ে যাওয়া বা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে এবং পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে।
একটি প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যতটা না আইন দিয়ে তার চেয়ে বেশি মানবিকতা দিয়ে করার প্রত্যয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ। সারাদেশের সকল থানায় শিশুদের জন্য আলাদা ডেস্ক আছে। সেখান শিশুরা গেলে সরাসরি তাদের অভিযোগ জানাতে পারবে। এ সুবিধা পুলিশের আছে।
সত্যিই কি ছেলেধরা আছে? একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলেধরা বলে কেউ নেই। তবে পত্রপত্রিকায় কিছু ঘটনা ঘটে। এরকম কোন ধরনের বিপদের আশঙ্কা পেলে শিশুদেরকে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে অবহিত করার আহবান জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, অতিদ্রুত ঢাকাবাসীর অভিযোগ আবদার শোনার জন্য একটি ফোন নাম্বার দেয়া হবে 'মেসেজ টু কমিশনার' নামে, যাতে করে যে কেউ তার কথা সরাসরি ডিএমপি কমিশনারের কাছে বলতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফেরদৌসী বেগম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। সভাপতিত্ব করেন শিশু প্রতিনিধি আফিফা রহমান। মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু প্রতিনিধি নীহারিকা বিনতে জামান নিধি।
'ছোটরা বলবে, বড়রা শুনবেন' আলোচনা শেষে শিশু নাট্যোৎসব এর তৃতীয় সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় নাটক 'চিরায়ত বাংলা'। রচনা ও নির্দেশনা শেখ আল মামুন। প্রযোজনা করেছে নেত্রকোনার বিদ্যাভুবন।