বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস আজ

গ্রামীণ নারী
গ্রামীণ নারী  © সংগৃহীত

আজ বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে গ্রামীণ নারী’। দিবসটি বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশ একযোগে পালন করছে। ১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের চতুর্থ নারী সম্মেলনে ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। পরিবার ও সমাজে গ্রামীণ নারীর অবস্থানের মূল্যায়ন করার লক্ষ্যে এ নারী দিবস পালন করা হয়।

ইউএন ওম্যানের তথ্য বলছে, পর্যপ্ত সুযোগ ও প্রযুক্তিগত বাধা দূর করতে পারলে নারী শ্রমিকদের মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনশীলতা ২.৫ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়। নারীদের কৃষিতে সরাসরি নিয়োজিত করা গেলে পরিবারের অপুষ্টি কমার গতি বৃদ্ধি পায় ১২-১৭ শতাংশ।

তবে সমাজ ও পরিবারে নারীরা নানামুখী অবদান রাখা সত্ত্বেও নানা বৈষম্য ও কম মজুরি পাচ্ছে তাঁরা। বেশি করুণ অবস্থায় থাকেন গ্রামীণ নারী শ্রমিকরা।   

উন্নয়নকর্মী ও এএলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান বলেন, কৃষক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি না থাকায় চারটি ক্ষেত্রে তাঁরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রথমত. আর্থিক ও প্রযুক্তি, দ্বিতীয়ত. খাসজমি লিজ না পাওয়া, তৃতীয়ত. সরকারি প্রণোদনা এবং চতুর্থত. যথাযথ মজুরি না পাওয়া।

রওশন জাহানের পরামর্শ, এই বৈষম্য দূর করতে হলে বিদ্যমান মজুরি আইন বদলাতে হবে। কৃষি আইনে জমির মালিকানাসংক্রান্ত ধারা সংশোধন করতে হবে।   

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপের (এলএফএস) তথ্য বলছে, দেশে মোট নারী শ্রমশক্তি আছে দুই কোটি। এর মধ্যে গ্রামেই রয়েছে দেড় কোটি নারী। অর্থাৎ মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৭৫ শতাংশ গ্রামে কাজ করে।

আরও পড়ুন: ১৫ অক্টোবর: ইতিহাসে আজকের এই দিনে

নারী শ্রমিকদের বেশির ভাগই পারিবারিক কর্মী এবং বিনা মূলে শ্রম দিচ্ছে। আবার পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারীর পারিশ্রমিক কম। গত বছর কৃষিতে একজন পুরুষ শ্রমিকের গড় মজুরি ছিল ৪১৮ টাকা। নারী পেয়েছেন ৩১৬ টাকা। ঢাকা, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে নারীদের পারিশ্রমিক জাতীয় গড়ের চেয়ে একটু বেশি। কিন্তু বাকি জেলায় নারীদের পারিশ্রমিক ২০০-২২০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ।   

বিবিএসের সর্বশেষ কৃষিশুমারির তথ্য বলছে, বাংলাদেশে মোট ৯৮ শতাংশ পরিবার পল্লী এলাকায় বসবাস করে। যার মধ্যে ৫৩.৮২ শতাংশ কৃষি পরিবার। এলএফএসের তথ্য মতে এক দশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ বাড়তি শ্রমশক্তির ৫০ লাখই নারী শ্রমিক।

এ সময় দেশে কৃষি, বন ও মৎস্য খাত এবং পশু ও হাঁস-মুরগি পালন প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিকের সংখ্যা ৩৭ লাখ থেকে বেড়ে প্রায় ৮০ লাখ হয়েছে। এ বৃদ্ধির হার ১১৬ শতাংশ। যদিও এসব নারী শ্রমিকের ৮০ শতাংশই অবৈতনিক ও পারিবারিক শ্রমিক। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কৃষিতে নারী শ্রমিকের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা প্রয়োজন।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!