দুই দশক ধরে জেবিন মোড়ে জমে থাকে হাঁটুপানি

জেবিন মোড় এলাকা
জেবিন মোড় এলাকা  © টিডিসি ফটো

যশোর শহরের অন্যতম ব্যস্ত ও প্রসিদ্ধ স্থান সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ (এমএম কলেজ) সংলগ্ন জেবিন মোড় এলাকা। প্রতিদিন ত্রিমোহনী এ মোড় দিয়েই ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করে এমএম কলেজের শত শত শিক্ষার্থী। জেবিন মোড় সংলগ্ন এলাকায় ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সহস্রাধিক লোকের বসবাস।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, হালকা ভারী বৃষ্টি বা দীর্ঘ সময় বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জেবিন মোড় হয়ে উঠে এক ভোগান্তির নাম। জলাবদ্ধতার ফলে মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। হাঁটু পানি থাকার কারনে স্বল্প আয়ের দোকান মালিকেরা দোকান খুলতে পারেন না। রাস্তায় খানা-খন্দ থাকার কারনে হাঁটু পানিতে  নিত্য দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ইজিবাইক, ভ্যান, রিকশা পথচারীদের চলাফেরা করতে হয়। রাস্তার ধারে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন রয়েছে তবে কোথাও কোথাও ড্রেনে ঢাকনা নেই বা থাকলেও তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমনকি রাস্তায় হাঁটু পানি থাকায় ড্রেনের ঢাকনার  উপর দিয়ে চলতে গিয়ে মোবাইলসহ কলেজ ছাত্রী ড্রেনে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ও ঘটেছে। বর্ষাকালীন সময়ে এই এলাকায় বাস করা মানুষের জন্য দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ দুই দশক ধরে এ সমস্যায় ভুগছেন বলে জানান বাসিন্দারা। চলাচলে বিঘ্ন ও দুর্ভোগ চলতে থাকলেও সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশ্বাস রয়েছে তবে নেই কার্যকরী কোন পদক্ষেপ, এমনটি দাবি স্থানীয়দের।

আরও পড়ুন: পর্দার কারণে ভাইভায় মুখ দেখাতে না পেরে নম্বরবঞ্চিত হচ্ছেন ঢাবি ছাত্রী

বৃহস্পতিবার (১৫ই সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ত্রিমোহনী জেবিন মোড়ের দুদিকের কয়েকশো মিটার রাস্তা জলাবদ্ধতায় ও খানা-খন্দে ভরে আছে। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় ইজিবাইক, ভ্যান, রিকশা এবং রাস্তার ধারের ড্রেনের উপর দিয়ে পথচারীরা চলাচল করছেন। বন্ধ অবস্থায় রয়েছে কয়েকটি স্বল্প আয়ের দোকান।

জলাবদ্ধতার বিষয়ে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আঞ্চলিক পুলিশিং কমিটির (খড়কী অঞ্চল) সেক্রেটারী আলমগীর কবীর বলেন, 'আমাদের দুরবস্থার শেষ নেই।জলাবদ্ধতার ফলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি, চলাচলে ভোগান্তিসহ নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি।গন্যমান্য ব্যক্তিসহ কয়েকবার সাবেক ও বর্তমান মেয়রের সাথে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে কয়েকবার আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস পেলেও সেটার সমাধান বাস্তবায়ন হয়নি।'

এ ব্যাপারে স্থানীয় মেসে থাকা এমএম কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ আল আমিন হোসেন বলেন, 'সেই ছয় বছর ধরে যশোরে আছি। থাকার শুরু থেকেই এলাকার এই অবস্থা দেখে আসছি। বার বার অনলাইনে এ বিষয়ে লেখালেখি করে, ছবি দিয়ে, পত্রিকাতে রিপোর্ট করা হলেও জলাবদ্ধতা সমস্যার কোন সমাধান হয়নি।'

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিবুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'আমি যেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সে রাস্তার সবখানে পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখেছি এবং স্থানীয়দের সাথে  সমস্যা নিরসনের জন্য আলোচনা করেছি। মূলত অপরিকল্পিতভাবে বাসা বাড়ি নির্মাণের ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।এ সমস্যা সমাধানের জন্য বড় ফান্ডের দরকার। আগামীকাল থেকেই জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করে দিব।'

জলাবদ্ধতার সমাধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌর মেয়র হায়দার গনি খান পলাশ বলেন, 'বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় এমন সমস্যা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। এ বছরের ডিসেম্বরেই টেন্ডার হলে আমরা কাজ শুরু করবো।'


সর্বশেষ সংবাদ