বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির কী প্রয়োজন

সম্প্রতি বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
সম্প্রতি বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ  © সংগৃহীত

কেউ কি আমাদেরকে বলবেন, কেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন? এখন পর্যন্ত কেউ যুক্তিসহ তথ্য উপস্থাপন করতে পেরেছেন? ব্র্যাক, নর্থ সাউথসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছে। এসব কমিটির পজিটিভ কিছু কি কেউ বলেছেন? বরং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

আপনি কি জানেন, শুধু ছাত্ররাজনীতি না থাকার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। ছাত্ররাজনীতি কি আগে জানতে হবে। দিনরাত মিটিং-মিছিল করে বিবাদে জড়ানো, ৪ বছরের ছাত্রজীবন ৮ বছর পাড়ি দেয়া, ভর্তি বানিজ্য বা হলরুম দখল, চাঁদাবাজি বা দেশসেবার নামে অপকর্ম করা—এর নাম ছাত্র রাজনীতি নয়।

ছাত্ররাজনীতি হলো সেটাই যেটা ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দিতে বা দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করা লক্ষ্য নিয়ে নিজেকে গঠনের সাথে অন্যদেরকেও নিজের মত করে গড়ে তোলা। কিন্তু বাস্তবতা কি বলে, ছাত্ররা কি ছাত্র রাজনীতি থেকে সেই শিক্ষা পাচ্ছে?

পত্রিকা খুললেই প্রকাশ্যে অনেক রিপোর্ট ও ভিডিও দেখে ছাত্র রাজনীতির প্রতি ছাত্রদের অনীহা চলে এসেছে। কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক রিপোর্টই তার প্রমাণ। জোর করে মিছিল-মিটিংয়ে নিয়ে যাওয়া, হলরুমে নির্যাতন করার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ নীরবতা আমাদেরকে অনেকটা হতাশ করেছে।

আরও পড়ুন: রাজনীতি ঠেকাতে মরিয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, যা বলছে ছাত্রলীগ

রাবিতে পড়া অবস্থায় মনে পড়ে যতদুর আমি বর্তমান রাজশাহী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন এমপির রুম্মেট ছিলাম। কৈ, কখনো তো তিনি মিটিং-মিছিলে বা কোন কর্মসূচীতে যেতে জোর করেনি। কিন্তু এখন এসব শোনা যাচ্ছে কেন?

বলতে পারি BRAC, NSU, IUB, AIUB ও IUBAT এই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা ও গবেষণার মান নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। তবে কেন  ছাত্র রাজনীতি প্রয়োজন?

যেসব কারণে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি প্রয়োজন নেই

>> অনেক অভিভাবক আছেন শুধু রাজনীতি না থাকায় তাদের সন্তানদেরকে এখানে ভর্তি করায়। সুতরাং রাজনীতি আসলে তাদের চিন্তা হবে দেশের বাইরে বা না পড়ানো বা যেখানে রাজনীতি নাই সেখানে ভর্তি করানো।

>> আমার মতে যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তারা দেশকে নেতৃত্ব দেয়া বা দেশের সেবার আজীবন আত্মনিয়োগ করার চিন্তা নেই বললেই চলে।

>> বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় সংকীর্ণ। মিছিল হলে বিল্ডিংয়ের ভেতর করতে হবে। সুতরাং ক্লাস বা পড়াশোনার মান আর থাকবে না।

>> শিক্ষার্থীদের বলেন, নিজের টাকায় পড়াশুনা করি স্বাধীনতার জন্য। ক্যাম্পাসে লাল-নীল-সাদা দল দেখতে চাই না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা পরিবেশ যেনো নষ্ট না হয় সেদিকে নজর দেয়া। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ উপর বিষয়টা ছেড়ে দেয়া হোক।

লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী ও সংগঠক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ