মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছা ছিলো না তূর্ণার, চান্স পেয়ে বললেন ‘আমি বাঁচতে চাই’

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © ফাইল ছবি

আমি এ বছর ঢাকার একটি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছি। সত্যি বলতে আমার ডাক্তারি পড়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলও না। জোর করে বাসা থেকে পরীক্ষা দেয়ালো; এরপর ভর্তি। আমার কাছে এখন এটা জীবননাশী মনে হয়। সবাই শুনে বলে.. কি বলো একটা সিটের জন্য কতো মানুষে মানুষের হাহাকার। তাও ঢাকার টপ একটা মেডিকেলে চান্স পেয়ে দুঃখী!!ভাব না নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলো।

আমি সবসময় বলি আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ না চাইতেই আমাকে এতটা দিয়েছেন। কিন্তু সত্যি বলতে আমি পারছি না।এই সাত দিনেই ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমি খুবই মিশুক আর চঞ্চল স্বভাবের। আমার ইচ্ছা আজীবন সোশ্যাল ওয়ার্ক করা আর ঘুরে বেড়ানো। আমার ইচ্ছা ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটা বিষয়ে ভর্তি হয়ে বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ আর ভ্রমণ করা এরপর পাশ করে কোনো এনজিওতে যোগ দেয়া। 

আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রের বুকে-পিঠে অর্ধশত ছুরিকাঘাতের চিহ্ন

কিন্তু মেডিকেলের পরিবেশটাই তো এমন না। সবাই সারাদিন পড়ে। আর আমি গত সাত দিনে বইটাই ধরি নাই। আমার পক্ষে সত্যি বলতে এতো চাপ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই কয় দিনের হোস্টেল থেকে কলেজ জীবনে আমি শেষ। কেউ একটু বাইরে বের হয় না, কারও মধ্যে কোনো উচ্ছ্বাস নেই। সবাই একেকটা যন্ত্র।

এসব মিলে আমি মা-বাবাকে আজকাল ঘৃণা করা শুরু করেছি। আমার মনে হয় তাদের জন্যই তো আমি এই জাহান্নামে চলে আসছি। আমার মন খুলে কথা বলার মতো কোনো বন্ধুও নাই। থাকবে কিভাবে... সবাই সারাদিন পড়ে। আর আমি ৮০ জনের গণরুমে জীবন্ত লাশের মতো ঘুরি।

আমার কাছে এখন আর কোনো উপায় নাই। কারণ আমাকে অন্য কোথাও পরীক্ষাও দিতে দেয় নাই। আবার আমি একটু ভালোভাবে বাঁচতেও চাই। একটু হাসতে আর প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে চাই। আজীবন ২-১ ঘণ্টা পড়া আমি এই অতল সাগর থেকে বাঁচতে চাই। পড়া আমি ভয় পাই না। আমার সে বিশ্বাস আছে যে সবাই সারাদিন ধরে যা পড়ে ওইটা আমি ৩-৪ ঘণ্টায় শেষ করতে পারবো। কিন্তু এই পরিবেশটা আমি নিতে পারছি না।

আমি একটু বাঁচতে চাই...

লেখা: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত


সর্বশেষ সংবাদ