কীর্তিনাশা পদ্মা: বাঙালীর এখন আত্মমর্যাদার প্রতীক

পদ্ম সেতু ও বিথী হোসাইন
পদ্ম সেতু ও বিথী হোসাইন  © ফাইল ছবি

কীর্তিনাশা নামটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পদ্মার সাথে। বর্ষাকাল এলেই মানুষের মাঝে ভয়ের সঞ্চার হতো। কখন বুঝি কীর্তিনাশা পদ্মার কবলে সবকিছু জলাঞ্জলি দিতে হবে। দুপাড়ের আছড়ে পড়া ঢেউ গ্রাস করতো মানুষের বসতবাড়ি ও খাদ্যশস্য। বছরের পর বছর এ ভোগান্তির স্বীকার হয়েছে হাজারো মানুষ। কখনোবা প্রিয়জন বিয়োগের আহাজারিতে প্রতিধ্বনিত হয়েছে পদ্মার পাড়। আর দুপাড়ের যোগাযোগ ছিল দুঃসাধ্য ব্যপার। 

সেই দুঃসাধ্য জয়ের দ্বারপ্রান্তে আজকে আমরা উপনীত হয়েছি। উৎকন্ঠা আর আতঙ্কের অবশানের প্রহর এসে গেছে। কল্পনা নয় দৃশ্যমান এখন পদ্মাসেতু। প্রিয়জন বিয়োগের আহাজারি আর শুনতে হবে না আমাদের। পৃথিবীর অনেক দেশকে ডিঙিয়ে পদ্মাসেতু ১১তম। 

নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় ৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে।যার নকশাকার ছিলেন এইসিওএম। দ্বিতল বিশিষ্ট ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটিতে থাকবে ফাইবার অপটিক ক্যাবল, গ্যাস৷ বৈদ্যুতিক লাইন এবং রেলওয়ে সেবা। পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে।শুধু তাই নয় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করতে অবদান রাখবে ১.২%। স্রোতস্বিনী পদ্মার বুক চিরে এ সেতু মানুষের জনজীবনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। দক্ষিনাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সময়ের গন্ডীকে উপেক্ষা করে মাত্র ৫-৬ ঘন্টায় এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলের যাতায়াত  সম্ভব হবে। 

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি,  শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, চিকিৎসা, যোগাযোগ ও শিল্প বিপ্লবের অন্য তম হাতিয়ার হবে পদ্মা বহুমুখী সেতু। যার প্রভাবে অবকাঠামো গত পরিবর্তন সাধিত হবে। অবহেলিত জনগনের মানোন্নয়নের সাক্ষ্য বহন করবে ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু। 

আশা জাগানো পদ্মা সেতু বাঙালির শত কোটি হৃদয়ের স্বপ্ন সারথি। হাজারো হতাশ, ব্যর্থতা ও বঞ্চনার মধ্যেও আজ আমারা আত্মতৃপ্তিতে বলীয়ান। তাইতো কবি সত্তার মতো বলতে ইচ্ছে করছে " মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে"। পদ্মা সেতুর ৪১৫ টি ল্যামপোস্টের আলো যেন বাঙালির মেহনতি মানুষের ঘামের উজ্জ্বল নক্ষত্র। পদ্মার বুকে ঠাঁই দাড়িয়ে থাকা গগন-চুম্বী সেতু হবে বাংলাদেশের আত্নমর্যাদা ও গৌরবের প্রতীক।

লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence