‘ছুটির ঘণ্টা’ দেখে বহু মাস স্কুলের টয়লেট ব্যবহারের সাহস পাইনি

আজিজুর রহমান ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
আজিজুর রহমান ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী  © ফাইল ছবি

আজিজ ভাই মারা গেছেন, জানতে পারলাম বেশ পরে। আজিজ ভাই মানে ফিল্মমেকার আজিজুর রহমান। ছোটবেলায় তাঁর পরিচালিত ‘ছুটির ঘণ্টা’ দেখে বহু মাস স্কুলের টয়লেট ব্যবহার করার সাহস পাইনি। পরে শুনছি, উনি নাকি ওই ছবি করার আইডিয়া পান একটা নিউজ রিপোর্ট থেকে।

সেই যুগে বাংলাদেশে বসে নিউজ রিপোর্ট থেকে আইডিয়া নিয়ে প্রেম-পিরিতি ছাড়া মেইনস্ট্রিমের জন্য একটা ছবি করার হিকমত সহজ নহে।

আমার সৌভাগ্য বড় হয়ে নিয়তি আমাকে আজিজ ভাইয়ের কাছে নিয়ে আসে। একুশে টেলিভিশনের জন্য ‌‘কানামাছি’ নামে একটা টেলিফিল্ম বানাই। পুরো ছবিটা একটা জাহাজের ভেতর। জাহাজ ঢাকা থেকে সুন্দরবন যায়, আর দর্শক হিসেবে আমরা যাই সুন্দর-মনের ভেতর।

আরও পড়ুন: বিদ্যালয়ের টয়লেট থেকে রক্তভেজা মাস্কসহ ছাত্রী উদ্ধার

ওই টেলিফিল্ম আমি শ্যুট করতে যাই কোনো স্ক্রিপ্ট ছাড়া। পুরা কাজটা ইম্প্রোভাইজেশনের মাধ্যমে করি। এবং ওই কাজেই আমি প্রথম মেট্রোপলিটন কলোকুইয়াল ব্যবহার করি।

আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররম ও সংসদে শুটিং করতে চান ফারুকী

তো সেই টেলিফিল্ম দেখে উনি আমাকে খুঁজে বের করেন। এবং আমি যা না, উনি সেই প্রশংসা করতে থাকেন আমাকে নিয়ে। উনি এই কাজটা করেন সেই যুগে যখন এফডিসি কেন্দ্রীক একদল ফিল্মমেকার হাজারটা উপায় বের করতেছিলেন আমার চাকা পাংকচার করার জন্য। তো সেইখানে উনার কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসা আমাকে উৎসাহিত করেছে এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই।

এরপর মাঝে মধ্যে কথা হতো। কিন্তু কানাডা চলে যাওয়ার পর যোগাযোগ কমে যায়। আজিজ ভাই, আমার আম্মা বলতেন মৃত মানুষ নাকি সব দেখতে পায়। জীবিতরা তো শুধু চোখের সামনে যা তাই দেখতে পায়।

মৃতরা দেখে কাছে দূরে, বাইরে ভেতরে সব দেখে। আপনি নিশ্চয়ই দেখছেন, আপনার জন্য কেনো জানি কান্না পাচ্ছে। যদিও আপনার সাথে আমার এমন কোনো স্মৃতি নাই যে কাঁদতে পারি। তবু কেনো মন কাঁদে হায়?


সর্বশেষ সংবাদ