এই মেধাগুলো যে কিভাবে তৈরি হচ্ছে!
- আমিনুল ইসলাম
- প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:১৬ PM , আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:১৬ PM
বুয়েটের ছাত্র আবরারের কথা বোধকরি আমরা এর মাঝেই ভুলে গিয়েছি। যাকে হলের ভেতর পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল তার’ই কিছু সহপাঠী। এর পরের দৃশ্য তো আমরা সবাই দেখেছি কিভাবে তাকে টেনে নিচে নামানো হয়েছিলো ইত্যাদি।
দিন কয়েক আগে এই মামলার শুনানি হয়েছে। তখন আবরারের চাচা বুয়েটের প্রভোস্ট’কে জিজ্ঞেস করেছেন
-আপনি তো জানতেন আবরারকে মারা হচ্ছে; আপনি কেন কিছু করেননি?
বুয়েটের শিক্ষক এই ভদ্রলোক কি উত্তর দিয়েছে জানেন?
- কিছু বলিনি, নইলে আমাকেও মারবে।
সেদিন থেকেই কিছু প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে একটা মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, এরপরও আপনার মনে হয়নি কিছু করা উচিত। উল্টো আপনি ভেবেছেন- কিছু বললে আপনাকেও মারবে। তাহলে ওই এক’ই ছাত্রদের আপনি পড়ান কিভাবে? কিংবা তাদেরকে গ্রেড কিভাবে দেন? তখনও কি একই ভয় কাজ করে?
এই একই প্রশ্ন, দেশের বাদ বাকী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছেও। আপনারা যদি আপনাদের ছাত্রদের এতো ভয়ই পেয়ে থাকেন- তাহলে পড়াচ্ছেন কিভাবে? কিসের ভিত্তিতে তাদের যাচাই করছেন? যেই গ্রেডগুলো দিচ্ছেন, সেগুলো কি ঠিক মতো দিচ্ছেন নাকি বুয়েটের এই প্রভোস্টের মতো আপনারাও ভয়ে থাকেন?
কেন ভয়ে থাকেন? কোথায় আপনাদের এতো ভয়? কোন কারণে এতো ভয়? আপনি যদি কোন অন্যায় করে না থাকেন, তাহলে তো ভয় পাবার কথা নয়।
নাকি শিক্ষক হয়েছেন এদের মতো ছাত্রদের ধরে? প্রভোস্ট কিংবা ভিসিও হয়েছে এদেরকেই ধরে?
এই হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক এবং শিক্ষা ব্যবস্থা। একটা ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে অন্য ছাত্ররা; আর তাদের মনে হচ্ছে- এ আর এমন কি। মারুক! আমাকে তো আর মারছে না! এইসব ছাত্ররাই আবার পাশ করে কেউ শিক্ষক হচ্ছে, কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা আমলা।
এবার বুঝে নিন- কেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নকল মাস্কের ব্যবসা করছে। কেন ডাক্তার নকল টেস্টের বিজনেস করছে আর পুলিশের সদস্যরা ডোপ টেস্টে ধরা পড়ছে।
নিশ্চিত জেনে রাখুন- সিসি ক্যামেরার ওই ভিডিও যদি ফাঁস না হতো; তাহলে আবরারের হত্যাকারীরা এতো দিনে মেধাবী বুয়েটের ছাত্রের উপাধিই পেত। এরপর এদেরই কেউ বড় বড় জায়গায় চাকরিও করতো। আহা কতো মেধা এই দেশে...
এই মেধাগুলো যে কিভাবে তৈরি হচ্ছে, আদৌ এরা আর মানুষ আছে কিনা; সেটা দেখার অবশ্য আমাদের কোন দরকার নেই।
(ফেসবুক থেকে নেয়া)