পৃথিবীর স্বর্গ দেখতে দেখতে মৃত্যুপুরীতে
- আমিনুল ইসলাম
- প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২০, ০৯:২৫ AM , আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০২ PM
আমরা যারা ইউরোপে থাকি, আমরা জানি এখানে একজন মানুষের জীবনকে কতোটা মূল্যবান হিসেবে দেখা হয়। প্রতিটা মানুষকে ধরে নেয়া হয় সম্পদ হিসেবে। ইউরোপের প্রায় বেশিরভাগ দেশে জনসংখ্যা এমনিতেই দ্রুত কমছে। কোন পরিবার বাচ্চা নিলে খুশি হয়ে উল্টো সরকার তাদের টাকা দেয়।
সেই ইউরোপে এখন প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে করোনা ভাইরাসে। দেখতে দেখতে পুরো ইউরোপ এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। মাত্র দিন ছয়েক আগেও ইতালির পাশের দেশ স্পেনের মানুষজন ভেবেছে করোনা ইতালির সমস্যা। স্পেনে এই সমস্যা হবে না!
সেই স্পেনে এখন মৃত্যুর মিছিল। ইতালিতে তো এই মিছিল থামছেই না! ফ্রান্সের অবস্থাও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমার এখানেও পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে ভয়ংকর হচ্ছে। বাতাসে মৃত্যুর গন্ধ। অথচ দিন দশেক আগে কেউ চিন্তাও করতে পারেনি; ইউরোপের দেশ গুলোকে এতোটা ভয়ংকর অবস্থায় যেতে হবে।
করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২, ৫, ১০ এমন। সবাই ভেবেছে, এতো কম সংখ্যক রোগী; কিছু হবে না!
অথচ দুই সপ্তাহ না যেতে'ই শয়ে শয়ে; হাজারে হাজারে করোনা আক্রান্ত রোগী। হাসপাতাল গুলোতে রোগী ভর্তি করানোর জায়গা নেই। ডাক্তার-নার্স নিজেরাই আক্রান্ত হচ্ছে। এ এক বিভীষিকা। পৃথিবীর স্বর্গ বলে পরিচিত ইউরোপ মহাদেশ দেখতে দেখতে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশে এর মাঝে ১০ জন করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে। যারা ভাবছেন- এটা আর এমন কি! সংখ্যা তো অনেক কমই। আর দুটো সপ্তাহ যেতে দিন। যেভাবে সবাই মেলামেশা করছে; জানি না আমারা আমাদের কতো প্রিয়জনকে হারাতে যাচ্ছি।
আজ দেখলাম ঢাকা উত্তরের মেয়র করোনা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হাত-ধোয়া কর্মসূচী পালন করেছেন হাজার হাজার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অনেকটা মিছিলের মত! এই লোক কি করে মেয়র হয়েছে?
এর মাথায় কি উপরওয়ালা সামান্য বুদ্ধি টুকুও দেয়নি? এতো মানুষ এক সাথে করে আপনি করোনা সচেতনা পালন করছেন? আমি নিজে স্রেফ নিজ পরিবার আর দেশকে ভালোবাসি বলে; দেশে না গিয়ে এই মৃত্যুপুরীতে পড়ে আছি; আর আপনারা কিনা এইসব করে দেশপ্রেমিক বনে যাচ্ছেন?
নিউইয়র্কের মত শহর থমকে গিয়েছে; প্যারিস থেমে গিয়েছে; আর আপনারা হাজার হাজার মানুষ নিয়ে সচেতনতা বাড়াচ্ছেন। সময় থাকতে সাবধান হন। নইলে আমাদের প্রিয়জন হারানোর দায় আপনাদের নিতে হবে।