অপরাধে জড়িয়ে চার মেডিকেলের ১০২ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার, বেশিরভাগই ছাত্রলীগের

১০২ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার করা চার মেডিকেল কলেজ
১০২ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বহিষ্কার করা চার মেডিকেল কলেজ  © ফাইল ছবি

তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজের অন্তত ১০২ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসককে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হওয়ার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধীতা ও অংশগ্রহণকারীদের নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের (মমেক) ২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) মেডিকেল কলেজের সভাকক্ষে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের নির্যাতন, ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, মাদক সেবন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. অনুপম সাহা ও তার অনুসারীরাও রয়েছেন।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অনুপম সাহা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান এবং শিক্ষার্থী মাশফিক আনোয়ার, মেহেদী হাসান, মঞ্জুরুল হক, রাকিবুল হাসান, আলমগীর হোসেন, আশিক উদ্দিন,অনুপম দত্ত, মাহিদুল হক, জাহিদুল ইসলাম, শিপন হাসান, সৈয়দ রায়হান আল আশরাফ, আসিফ রায়হান, দিগন্ত সরকার, কুবের চক্রবর্তী, সিয়াম জাওয়াদ, রায়হান ফাল্গুন, অর্ণব সাহা, কামস আরেফিন, সঞ্জীব সরকার, সাইফুল ইসলাম, মুনতাসুর রাতুল, সানজিদ আহমেদ, আসিফ ইকবাল, শাহরিয়ার ইফতেখার, আশিক মাহমুদ ও মেরাজ হোসেন।

কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজমুল আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত সদস্যের কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সে পর্যন্ত ক্যাম্পাস ও হোস্টেল থেকে বহিষ্কার থাকবেন ২৮ শিক্ষার্থী।

এর আগে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান গ্রহণসহ বিভিন্ন অভিযোগে মমেক হাসপাতালের ১৩ ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ডিসিপ্লিনারি কমিটি অভিযুক্তদের আজীবন হোস্টেলে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন মেয়াদে ইন্টার্নশিপ থেকে বহিষ্কার করেছেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের পরিচালক ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান গ্রহণ, আন্দোলন বানচালের উদ্দেশ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের হুমকি প্রদান, ভয়ভীতি প্রদর্শন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের অপরাজনীতিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ, সাধারণ শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, ক্যাম্পাস ও তৎসংলগ্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, হোস্টেলে মাদক বাণিজ্য ও মাদক সেবনসহ ইত্যাদি অপরাধে হাসপাতালের ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক জরুরি সভা শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ১৩ ইন্টার্ন চিকিৎসকের প্রশিক্ষণ স্থগিত করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে এবং সশরীরে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সবাইকে আজীবনের জন্য হোস্টেলে নিষিদ্ধ করাসহ ডা. প্রতীক বিশ্বাস, আবু সালেহ মো. লতিফুল কবির কৌশিক, সুনীতি কুমার দাস এবং ফায়াদুর রহমান আকাশকে দুই বছরের জন্য, শামীম রেজা, নাইমুর রশীদ, মেহেদী হাসান রোমান, আবু তাহের বিপ্লব রুবেল, কামরুল হাসান ও আবু রায়হানকে এক বছরের জন্য এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাত নামের একজনকে ছয় মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এ ছাড়া ডা. অর্নব কুন্ড এবং কাশফি তাবরিজকে হোস্টেলে নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের ইর্ন্টানশিপের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানায়, কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া সবাই মমেক কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল। গত বুধবার (২ অক্টোবর) কলেজের সম্মেলনকক্ষে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দিলরুবা জেবা গণমাধ্যমকে বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ পর্যালোচনা করা হয়। পরে কাউন্সিল সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৪ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐষিকা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান জীমকে ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ স্থগিতসহ মামলার সুপারিশ করা হয়। তারা দুজনই ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অন্য ১৬ জনের ইন্টার্নশিপ সনদ স্থগিত, বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২৬ ব্যাচের নুজহাত তাবাসসুমকে ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৭তম ব্যাচের নাইম আল ফুয়াদ খানের ইন্টার্নশিপ পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত, আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত, ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার ও মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। একই ব্যাচের সৌরভ পাল ও ইমরান হোসেনের ইন্টার্নশিপ পাঁচ বছরে জন্য স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

২৭তম ব্যাচের আশরাফুল কবিরের ইন্টার্নশিপ চার বছরের জন্য স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তিন বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে ২৭তম ব্যাচের আল নাহিয়ান খানকে। ২৮তম ব্যাচের আজিজুল হক প্রান্ত এবং ২৯তম ব্যাচের সাদমান ও ইফতেখার আহমেদকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দুই বছর ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

২৭তম ব্যাচের অনুজ বিশ্বাসকে এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার, ২৯তম ব্যাচের মুসুক উল্লাহ, ৩০তম ব্যাচের আকিফুর ফারহান, প্রান্তিক চন্দ্র মোহন্ত, শামীম রেজা, তাজবিন আহমেদ ও মাহমুদুল হাসানকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ছয় মাস ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ করেছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে আহবায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসানের বক্তব্য জানা যায়নি। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, শাস্তি পাওয়া সবাই ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতা-কর্মী। 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ২০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার দায়ে শাস্তি পাচ্ছেন আরও ১২ শিক্ষক। গত মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রামেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পর তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০ শিক্ষার্থীরা বিরুদ্ধে কঙ্কাল ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বহন, মাদক সেবন, হোস্টেলের সিট দখল, র‌্যাগিং, ইন্টার্নদের নির্যাতন, নারী হোস্টেলে প্রবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে বক্তব্যসহ হুমকি ও নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আর শাস্তি পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ছয়জনকে বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে।

রামেক সূত্র জানায়, শাস্তি পাওয়া ২০ শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। এর মধ্যে এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের সজিব আকন্দকে তিরস্কার এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে মুচলেকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ১৯ জনকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ছয়মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হবে।

এক বছরের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নকিবুল ইসলাম শাকিল, নাফিউ ইসলাম সেতু এবং ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়। ছয় মাসের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, জুহাইর আঞ্জুম অর্ণব, মাহফুজুর রহমান, ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ ও পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসির। 

রামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার ফয়সল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৩৪ শিক্ষক ও ৪৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

অধ্যক্ষ আরও বলেন, যারা অভিযোগ তুলেছেন এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সবাই এ মেডিকেলের শিক্ষার্থী। তাই নির্মোহভাবে তদন্ত করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি। সুপারিশ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তোলা হলে সর্বসম্মতিক্রমে শাস্তির ব্যাপারে একমত হন সবাই।

নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজের ৯ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। ছাত্রত্ব বাতিল হওয়া ৯ জনসহ মোট ১১ জনকে স্থায়ীভাবে হোস্টেলের সিট বাতিল এবং তিরস্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এরমধ্যে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও রয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়। 

আরো পড়ুন: অর্ধেকের বেশি গণিত শিক্ষকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষাই নেই

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আহসানুল হক শিহাব ও মীর সাদ্দাম হোসেনকে এক বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা। তারা দুইজন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া নাবিদ হোসেন, প্রিতম সেন, তানভির মাহতাব রাফি, তৌহিদুল ইসলাম, শায়ন বণিক ও ফাহিম ফাহাদকে ৬ মাসের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা। আর ফাহাদ হোসেনকে তিন মাসের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

ছাত্রত্ব বাতিল হওয়া ৯ শিক্ষার্থীসহ শাহ সুফিয়ান ও শাহ মাসরুর নিপুণের স্থায়ীভাবে হোস্টেলের সিট বাতিল করা হয়েছে এবং তারা এমন অপরাধ করবে না মর্মে মুচলেকা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত ১১ জনকে তিরস্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, গত জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মেয়েদের লাঠি দিয়ে মারতে যাওয়া, আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হুমকি প্রদান, মেয়েদের যৌন হয়রানি এবং বখাটেদের লেলিয়ে দেওয়ার হুমকি, ছাত্রলীগকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রদানসহ নানা অভিযোগ এনে প্রমাণসহ গত ১৯ আগস্ট সাধারণ শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগে জানায়। এরই প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির প্রদানকৃত রিপোর্টের ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ