মেডিকেল শিক্ষক রায়হানের চাকরিচ্যুতি ও শাস্তি চেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৯ PM , আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৪ AM
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে এক ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরীফের চাকরিচ্যুতি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভে সিরাজগঞ্জ-নলকা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বিক্ষোভস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ-২ (সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী। তিনিও ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুতি, তার সনদ বাতিল এবং ছাত্রকে গুলির ঘটনায় প্রচলিত আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা ক্লাসে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দেন।
পরে কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন। রায়হান শরীফকে চাকরিচ্যুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেয়া হলে আরও কঠোর আন্দোলন করা হবে বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে দুপুর ১২টার পর কলেজে এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠন করে দেওয়া তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তারা প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। মেডিকেল কলেজে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ বলছে, আগ্নেয়াস্ত্রের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল রায়হান শরীফের। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি আগ্নেয়াস্ত্র কাছে রাখা শুরু করেন। ছাত্রজীবনে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। রায়হান শরীফের মোবাইল ফোনে অনেক অস্ত্রের ছবি পাওয়া গেছে। এগুলো তিনি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে রেখেছিলেন। এছাড়া তার হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেখানে এই শিক্ষকের অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজকেই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আদালতে রায়হান শরীফের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে কলেজের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক তৃতীয় বর্ষের ক্লাস নেওয়ার সময় শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের পায়ে গুলি করেন। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে আটকে রাখেন। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।