ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন ‘জুলাইয়ের রাজপথে গুলিবিদ্ধ’ বাবলু

বাবলু
বাবলু  © টিডিসি সম্পাদিত

২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই আন্দোলনে রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন টঙ্গীর সাহসী ছাত্রনেতা মুহাম্মদ বাবলু। মাত্র ২১ বছর বয়সেই আজ তিনি লড়ছেন ভয়াবহ এক শত্রুর মরণব্যাধি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। তবে অর্থাভাবে থেমে যাচ্ছে তার চিকিৎসা।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের আবুল কাশেমের ছেলে বাবলু বর্তমানে গাজীপুরের টঙ্গী বেপারীবাড়ি এলাকায় বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। টঙ্গী সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই দুই মাস আগে ধরা পড়ে খাদ্যনালীতে ক্যান্সার—চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হয় Gastro-esophageal Adenocarcinoma Grade-III।

প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডির নিউ লাইফ হাসপাতালে। চিকিৎসকদের মতে, বাবলুকে মোট ৮টি কেমোথেরাপি নিতে হবে। এর মধ্যে তিনটি থেরাপি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি থেরাপির পেছনে খরচ পড়ছে প্রায় ৪০ হাজার টাকার বেশি। এরপর প্রয়োজন জটিল অস্ত্রোপচার, যার জন্য দরকার আরও কয়েক লাখ টাকা।

বাবলু বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আরও পাঁচটি কেমো বাকি। অপারেশন তো দূরের কথা, পরের থেরাপিগুলোর খরচই জোগাড় করতে পারছি না।’

তার বাবা আবুল কাশেম নিজ এলাকায় একটি ছোটখাটো ব্যবসা করেন। ছেলের চিকিৎসার জন্য যা কিছু ছিল, তা ইতোমধ্যেই ব্যয় হয়ে গেছে। এখন পরিবারটি দারুণ অর্থসংকটে পড়েছে।

ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় বাবলু শুধু একজন শিক্ষার্থীই নন, ছিলেন একটি প্রজন্মের কণ্ঠস্বর। তিনি টঙ্গীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন রাজপথে। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই উত্তরা বিএনএস সেন্টারে সংঘটিত ঘটনার সময় পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। তার বুকে এখনো একটি ছররা গুলি রয়ে গেছে।

আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাবলু বলেন ‘আমি বাঁচতে চাই। পৃথিবীর আলো-বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চাই। আবার রাজপথে দাঁড়াতে চাই মানুষের অধিকারের জন্য।’

টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রেদোনুর রহমান প্রত্যয় বেপারী বলেন, ‘বাবলু আমাদের সাহসের প্রতীক। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও মাথা নত করেনি। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যেন সে অর্থের অভাবে না মরে, সেটা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

বাবলুর চিকিৎসা সহায়তায় সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি সহযোগিতার আবেদন জানানো হয়েছে। সহায়তা পাঠাতে বা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন বাবলুর পরিবারের সঙ্গে—মুঠোফোন নম্বর: ০১৭১৬৬৯০৭৫৮।


সর্বশেষ সংবাদ