সৈয়দ রেফাত আহমেদের বিদায়ী অভিভাষণ রবিবার, কে হচ্ছেন নতুন প্রধান বিচারপতি?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৫ PM
অবসর নেয়ার আগে বিদায়ী অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এ অভিভাষণ দেবেন তিনি। আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর রবিবার বিকেল ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে দেশের জেলা আদালতগুলোতে কর্মরত উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি দেশের সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে ‘বিদায়ী অভিভাষণ’ দেবেন।
চব্বিশের অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন।
এদিকে, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের অবসরের ঘনিয়ে আসায় আইনাঙ্গনে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি কে হবেন, তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
বর্তমান প্রধান বিচারপতির অবসরের আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি দায়িত্বে আছেন। জ্যেষ্ঠতার ক্রমে তারা হলেন—বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস.এম. ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ.কে.এম. আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। এদের মধ্যে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা রাখেন। সাধারণত আপিল বিভাগের বিচারপতির মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ২৫তম প্রধান বিচারপতির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন সরকার প্রধান শেখ হাসিনার দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের ছয়জন বিচারপতি পদত্যাগ করেন। সেই উত্তাল সময়ে রাজপথে ছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদকে অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওসমান হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে আইন শাস্ত্রের ডিগ্রি পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে মাস্টার্স ও পিএইচডি করেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসিতে। সৈয়দ রেফাত আহমেদ অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করেছেন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতে এবং ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হন। এর দুই বছর পর তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন তিনি।
ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশের প্রথিতযশা আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমেদ ও ড. সুফিয়া আহমেদের ছেলে। ইশতিয়াক আহমেদ দুইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দ রেফাত আহমেদের মা ভাষাসৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. সুফিয়া আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন।