কারামুক্ত হলেও মা–বাবার কাছে ফিরতে পারল না শিশুটি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫০ AM
চট্টগ্রামে পুলিশের গাফিলতিতে তিন দিন আটক থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছে সাত বছরের এক শিশু। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে বাবা সাগর সাগরে কাজে থাকায় এবং মা কারাগারে বন্দি থাকায় শিশুটিকে আপাতত সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকতে হচ্ছে।
গত শুক্রবার চট্টগ্রাম ষোলশহর এলাকা থেকে এক অপহরণ মামলায় শিশুটির মায়ের সঙ্গে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু শিশু আইন অনুযায়ী, ৯ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার বা আটক রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে একই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করারও সুযোগ নেই। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে গত রবিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম শিশুটির মুক্তির নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রবেশন কর্মকর্তা মনজুর মোরশেদ বলেন, আদালতের নির্দেশে টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে মুক্তির পর শিশুটিকে তাদের জিম্মায় নেওয়া হয়েছে। তাকে টঙ্গী থেকে চট্টগ্রামে আনা হচ্ছে। বাবা সাগর সাগরে থাকায় এবং মা কারাগারে থাকায় শিশুটিকে হাটহাজারীর সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হবে। বাবা ফিরে এলে বা মা মুক্তি পেলে শিশুটি তাদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হবে। এর আগ পর্যন্ত সে সমাজসেবার তত্ত্বাবধানে থাকবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার শুরু ১৩ এপ্রিল। অসুস্থ বড় ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান মা আনোয়ারা বেগম। সেখান থেকেই হারিয়ে যায় চার বছরের শিশু মো. রামিম। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পেয়ে সাত মাস পর গত শুক্রবার পাঁচলাইশ থানায় অপহরণ মামলা করেন তিনি। মামলায় আসামি করা হয় সাত বছরের শিশু ও তার মাকে। তবে এখনও রামিমকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ, হাসপাতালের বারান্দা থেকে ওই দুজন শিশু রামিমকে খেলার কথা বলে নিয়ে যায়।
অভিযোগের দিনই পাঁচলাইশ থানার এসআই এনামুল হক শিশুটি ও তার মাকে ষোলশহর থেকে গ্রেপ্তার করেন। শুক্রবার আদালতে পাঠানো হলেও শিশুটিকে এজলাসে হাজির করা হয়নি। অবকাশকালীন কার্যক্রম চলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত অন্তর্বর্তী আদেশে শিশুটিকে টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান। বিষয়টি আলোচনায় এলে গত রবিবার মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শিশুটির জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে মুক্তির নির্দেশ দেন।
টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ইমরান খান বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর শিশুটিকে একজন সমাজকর্মীর তত্ত্বাবধানে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ বলেন, বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে, এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।