স্বপ্ন বারবার থেমে যাচ্ছে প্রিলিতে?
- ইমা হালিমা
- প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ০৪:৩৩ PM , আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫, ০৯:০৬ PM
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার লক্ষ্য পূরণের পথে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাই প্রথম ও অপরিহার্য ধাপ। কিন্তু সঠিক কৌশলের অভাবে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগী বাদ পড়েন এই ধাপে। এমনকি অনেক প্রতিযোগী বারবার প্রিলিতে ব্যর্থ হয়ে থাকেন। আজকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণগুলো আলোচনা করা হলো:
১. সিলেবাস সর্ম্পকে স্পষ্ট ধারণা না থাকা: অনেক প্রার্থী সম্পূর্ণ সিলেবাসে কোন টপিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে না পারার কারণে অপ্রয়োজনীয় ও দুনিয়ার হাবিজাবি অনেক কিছু পড়ে থাকেন। যে টপিকে প্রশ্ন হয় না সেসব টপিক নিয়ে পড়ে থাকেন। প্রশ্নব্যাংক অ্যানালাইসিস না করতে পারার কারণে কোনগুলো পড়তে হবে কোনগুলো বাদ দিতে হবে তা জানেন না ।
২. SWOT অ্যানালাইসিস করতে না পারা: SWOT অ্যানালাইসিস করতে না পারার কারণে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কী কী গ্যাপ রয়েছ তা বুঝতে পারেন না।
৩. অগোছালো প্রস্তুতি: একদিন ১০ ঘণ্টা পড়ে কয়েকদিন আর বই ধরছেন না। পড়ায় ধারাবাহিকতা না থাকলে প্রিলি টেকার আগ্রহ পাবেন না। পরে কোথায় থেকে শুরু করবেন বুঝতে উঠতে পারেন না। যেমন:
* ইংরেজি সাহিত্য পড়তে গিয়ে Shakespeare,John Donne,Romantic (Shelly, Keats, Wordsworth,Coleridge), Victorian (Hardy, Dickens),Shaw, Hemingway,literary terms, quotation এ বেশি গুরুত্ব না দিয়ে সব পড়তে থাকা।
* গণিত, বিজ্ঞান, কম্পিউটার, মানসিক দক্ষতা সময় কম দিয়ে সারাদিন সাধারণজ্ঞান ও সাম্প্রতিকে জোর দেওয়া
* বাংলা ব্যাকরণে ও ইংরেজি গ্রামার গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ভালোভাবে না পারা। যেমন: সমাস, বানান, প্রকৃতি, প্রত্যয়, সন্ধি, nonfinite verb, clause and phrase, conditionals, correction, parts of speech (adjective , pronoun, adverb, conjunction) এর রুলগুলো ভালোভাবে না জানা ।
৪. প্রস্তুতিতে গড়িমসি: আজ পড়ব কাল পড়ব বলে পড়ার পাহাড়ে জমিয়ে ফেলছেন কিংবা মনে করছেন পরীক্ষার আগে ২মাস ভালো করে পড়বেন। এমন তাড়াহুড়ো করে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে গেলে পরীক্ষায় প্রচুর কনফিউশন কাজ করতে পারে। ফলে বেশি ভুল হতে পারে। যার ফলে আশানুরূপ ফলাফল হয় না।
৫. একই বিষয়ে একাধিক বইপড়া : একাধিক বইপড়ার চেয়ে একটা বই ভালোভাবে পড়া উচিত। কিন্তু অনেকেই একই বিষয়ে একাধিক বই কিনেন কিন্তু শেষ করতে পারেন না।
৬. রিভিশনের অভাব: শেষমুহূর্তে নতুন টপিক না ধরে বারবার রিভিশন দেওয়া সবচেয়ে জরুরি। শুধু ভালো রিভিশনের অভাবে পরীক্ষার হলে কনফিউজড হয়ে পারা জিনিসগুলো ভুল করতে পারেন।
৭. মডেল টেস্ট না দেওয়া: মডেল টেস্টের মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করা যায়। ভুল ক্রটি বের করা যায়। এমনকি নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি ও পরীক্ষার হলে চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশি বেশি মডেল টেস্ট প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রথমে বিষয়ভিত্তিক তারপর পুরো ২০০ নম্বরের অনুরূপ মডেল টেস্ট দিতে পারেন। কিন্তু অনেকেই মডেল টেস্টে জোর দেন না।
৮. সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় নষ্ট করা: সার্কুলার দেওয়ার পর প্রার্থীর উচিত টাইম ম্যানেজমেন্টে কৌশলী হওয়া। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক সময় নষ্ট করে থাকেন।
৯. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট না জানা: শেষ মুহূর্তে এসে অনেকে হাল ছেড়ে দেন। পরীক্ষার হলে চাপ সামলাতে না পারার কারণে সবকিছু গুলিয়ে ফেলেন। অনেকেই গণিত দিয়ে শুরু করে উত্তর না মিলাতে পারলে ঘাবড়ে যান আবার অনেকে শেষের দিকে আন্দাজে দাগাতে থাকেন। পরীক্ষার হলে নার্ভাস হয়ে যাওয়া এমনকি সময়ের ব্যবহার ঠিক মত না পারার কারণের অনেকের ফলাফল পরীক্ষার খারাপ হয়ে থাকে।
লেখক:
ইমা হালিমা
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ,
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ।