দেশেই পামওয়েল প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন উদ্ভাবন
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:৩৭ PM , আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:৩৭ PM
পামওয়েল বাংলাদেশের প্রধানতম ভোজ্যতেলের একটি। দেশে প্রতি বছর পামওয়েলের প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাহিদা রয়েছে যার বেশিরভাগই বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমানে প্রতিবছর গড়ে তেল ও বীজ আকারে ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন ভোজ্য তেল আমদানি করা হয়। চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তেল আমদানি কমাতে ২০১১ সালে সরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০ লক্ষ পাম ওয়েল চারা রোপণ করা হয়েছিল।
কিন্তু উপযুক্ত যন্ত্রের অভাবে এসব গাছ থেকে উৎপাদিত পাম প্রক্রিয়াজাত করে তেল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পাম গাছ থেকে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে পামওয়েল প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদে অনুষ্ঠিত ‘ডিজাইন এন্ড ডেভলপমেন্ট অফ পাওয়ার অপারেটেড পাম ওয়েল ফ্রুট স্ট্রিপার’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এসব তথ্য জানান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল ।
অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল বলেন, ২০১১ সালে সরকারি উদ্যেগে দেশের সিলেট, দিনাজপুর, পার্বত্য অঞ্চলেও প্রচুর পামগাছ লাগানো হয়। কিন্তু বিদেশ থেকে আমদানীকৃত মেশিনের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ কৃষকের পক্ষে তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ করা সম্ভব ছিল না। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এবং পাম চাষের আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকেরা। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই দীর্ঘ ৮ বছরের প্রচেষ্টায় যন্ত্রটি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও যন্ত্রটি আবিষ্কার করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় ছিল। প্রথমে অটোক্যাডে মেশিনের ফ্রি ডিজাইন করেছি। মেশিনের জন্য ভালো মানের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করেছি, যাতে মেশিনটি টেকসই হয়। পামওয়েলের ব্যাঞ্চ কাটা থেকে ক্রুড ওয়েল তৈরি করতে যত কম সময় লাগে, ততই তেলের উৎপাদন বেশি হয়।
উদ্ভাবক আরোও বলেন, সারাদেশে যন্ত্রটি পৌঁছাতে পারলে দেশের বাইরে থেকে পামওয়েল আমদানী তো বন্ধ হবেই এমনকি বিদেশেও রপ্তানীর সুযোগ তৈরি হবে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিত্যক্ত সমুদ্র অঞ্চলে ও পাবর্ত্য অঞ্চলের পরিত্যক্ত জমিতে পাম গাছ রোপন করা গেলে পামওয়েলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ বেকারের কর্মস্থানও হবে ।
কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খান মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার। কর্মশালার শেষে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।