নতুন শিক্ষার্থীদের জায়গা করে দিতে হলের বরাদ্দকৃত সিট ছাড়লেন ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থী
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৯ AM , আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৭ PM
ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাস সংকটে যখন নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে হলে সিটের জন্য দিশেহারা, ঠিক সেই সময় নজির গড়লেন দুই শিক্ষার্থী। জুনিয়রদের কথা চিন্তা করে স্বেচ্ছায় বরাদ্দকৃত বৈধ সিট ছেড়ে দেওয়ার জন্য কলেজ প্রশাসনের নিকট আবেদন করেছেন তারা।
দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এমন কাজ করেছেন ঢাকা কলেজের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল হাসান এবং একই বিভাগের মো. শাহেদুজ্জামান। আরিফুল ইসলাম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা যায়, ঢাকা কলেজের নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ৮ মাসেও ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এরপর শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে গত ২৯ জুন ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দের নোটিশ দেন কলেজ প্রশাসন। তবে প্রথম বর্ষের এসব শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ প্রশাসন থেকে বরাদ্দকৃত সিটের সংখ্যা খুবই স্বল্পসংখ্যক। এই প্রেক্ষাপটে জুনিয়রদের সুযোগ করে দিতে ঢাকা কলেজ উত্তর ছাত্রাবাসের ২১১ রুমের শিক্ষার্থী আরিফুল হাসান ও দক্ষিণায়ন হলের ৩০৪ রুমের শিক্ষার্থী মো. শাহেদুজ্জামান স্বেচ্ছায় তাদের সিট প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন।
এ বিষয়ে এক ফেসবুক পোস্টে মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ডিপার্টমেন্টের অনেক জুনিয়র তাদের আর্থিক সংকটের কথা এবং পরিবারের বিভিন্ন বিষয়ে জানাতো, যা শুনে আমার অনেক কষ্ট লাগতো। কারণ আমি তাদেরকে তাদের মত করে কোনো রকম সহযোগিতা করতে পারছি না । এমতাবস্থায় আমার সাধ্যের মধ্যে আমার হলের সিটটি ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছি, যাতে ডিপার্টমেন্টের জুনিয়ররা যেন কিছুটা সুযোগ পায়।
হলে সিট ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি লক্ষ্য করছি, আমার বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন, যারা আমার চেয়েও বেশি আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদের কথা বিবেচনা করে আমি আমার সিট ও আবাসন সুবিধা স্বেচ্ছায় ত্যাগ করলাম।
মাস্টার্সের বড় ভাইদের উদ্দেশ্য করে ছাত্র অধিকারের নেতা আরও বলেন, আমি মাস্টার্সের বড় ভাইসহ সকলকে অনুরোধ করবো যাদের বাইরে থাকার সামর্থ্য আছে, আপনারা আপনার বিভাগের এমন জুনিয়রদের কথা ভাবুন, যাদের সত্যিই একটি সিটের প্রয়োজন রয়েছে। তাদের জন্য আপনারা সিট ছেড়ে দিয়ে মানবিকতার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
তিনি আরও বলেন, এই উদাহরণ শুধু মানবিকতারই নয়, বরং ঢাকা কলেজের ঐতিহ্যবাহী বন্ধন ও সহমর্মিতারও প্রতিচ্ছবি। কলেজ প্রশাসনকেও এমন ইতিবাচক পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে।