‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের কাপুরুষ ভাববে’
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৪ AM
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ভীরু ও কাপুরুষ হিসেবে দেখবে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এই সনদ একটি রাজনৈতিক সমঝোতা, যা অতীতের যেকোনো চুক্তির তুলনায় বেশি স্বচ্ছ, সুগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। এটি ভবিষ্যতে আইনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)-তে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে তা উত্তরণযোগ্য। এটি কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় যে পরিবর্তন সম্ভব নয়। যারা পরাজিত হয়েছে, তাদের ন্যারেটিভে প্রভাবিত হয়ে সনদটি বানচাল করার চেষ্টা করলে দেশ পিছিয়ে পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭২ সালের সংবিধানকে বিকৃত করে অতীতে স্বৈরাচারী সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন হলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে এবং ‘জুলাই হত্যার বিচার’ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।’
আরও পড়ুন: এবার থালা-বাটি হাতে রাস্তায় নামছেন শিক্ষকরা
আসাদুজ্জামান জানান, অতীতের গুম-খুন ও নিপীড়নের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে শুরু হয়েছে। এখন চলছে যুক্তিতর্ক, রায়ের অপেক্ষা। এ বিচারের মূল ভিত্তি হলো জুলাই সনদের চেতনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ একটি ঐতিহাসিক দলিল, যার বাস্তবায়নের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এ সনদ ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি ফের সক্রিয় হয়ে উঠবে, যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সনদে জনগণের ন্যায়বিচার, ভোটাধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন রয়েছে। এর সফল বাস্তবায়নেই স্বৈরাচারী কাঠামোর অবসান সম্ভব।’
কিরণ বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ফলে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে। তবে শুধু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়—যদি সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকে, তাহলে স্বৈরাচার পরিবর্তন সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন,‘এই সনদকে জাতীয় অঙ্গীকার হিসেবে নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনকল্যাণে কাজ করতে হবে। যে দল এই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’—এই প্রস্তাব নিয়ে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। পরাজিত হয় বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির দল।
বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, মনিরুজ্জামান মিশন ও মাইদুর রহমান রুবেল। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।