কারাগারে শিক্ষক নিয়োগ বাড়ানো হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৩২ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৩৭ PM
দেশের ৬৮টি কারাগারে প্রায় ৭০ হাজার কয়েদি ও হাজতিকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, প্রতিটি ওয়ার্ডে নামাজের ব্যবস্থা, নৈতিকতা ভিত্তিক বইপুস্তক ও জায়নামাজ বিতরণসহ নানা কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। খবর বাসস।
তিনি বলেন, কারাগারে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও নিজ নিজ ধর্মচর্চা ও ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নের সুযোগ পাচ্ছেন। শিগগিরই বিপুল সংখ্যক ধর্মীয় বই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হবে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, আগে কারাগারে নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার তেমন উদ্যোগ ছিল না। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বন্দিদের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জ কারাগারে ২৫শ’ বন্দি পবিত্র কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কারাগারকে প্রকৃত অর্থে সংশোধনাগারে পরিণত করতে হলে বন্দিদের মধ্যে নৈতিকতা ও আদর্শমূল্যবোধ জাগাতে হবে। এজন্য প্রত্যেকের নিজ ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। বর্তমানে ইসলামি ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক এ কার্যক্রমে যুক্ত আছেন, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হবে। তিনি মনে করেন, সবাই অপরাধী নয়—অনেকে মিথ্যা মামলায় আটক আছেন, তাই আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত কাউকে দোষী বলা ঠিক নয়।
হজ ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে ড. খালিদ জানান, এ বছর নির্বিঘ্নে হজ সম্পন্ন হয়েছে এবং খরচ সাশ্রয় হওয়ায় সরকারি হজযাত্রীদের ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতায় এবারের হজ ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি জানান, যাকাত ফান্ড থেকে ১১ কোটি টাকা অসহায় ও অসুস্থদের সহায়তায় ব্যয় করা হয়েছে। ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ৪ হাজার ৬২০ জনকে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা অনুদান এবং ৬০০ জনকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঈদগাহ, কবরস্থান ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের সংস্কার ও উন্নয়নে শত কোটি টাকার বেশি অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীকে কুরআন শিক্ষা, প্রাক-প্রাথমিক ও বয়স্ক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ৭৬ হাজারের বেশি ইমাম, মুয়াজ্জিন ও শিক্ষিত নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াকফ এস্টেট ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয়করণের কাজও চলছে, যা চালু হলে অনলাইনে সেবা প্রদান ও সম্পত্তি মনিটরিং সহজ হবে।