হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত খাবেন যে ৮ খাবার

প্রতীকি ছবি
প্রতীকি ছবি  © সংগৃহীত

বর্তমানে হৃদরোগ বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, খাবার এবং অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলেই দিনদিন এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অতিরিক্ত ফ্যাট ও কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতাও এ ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন ও নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখলে হৃদরোগগুলোর ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। সঠিক খাবারের মাধ্যমে মৃত্যুব্যাধি এ বিপদ থেকে নিজেকে অনেকটাই রক্ষা করা যেতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, যে আট খাবার খেলে ভালো থাকবে আপনার হার্ট।

সতেজ শাক-সবজি: পালং শাক ও লাল শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। আর এ উপাদানগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে ও রক্তনালিকে সুরক্ষা প্রদান করে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যে, সবুজ শাক সবজি হার্টের বিভিন্ন রোগব্যাধির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই নিয়মিত সতেজ, সবুজ শাকসবজি খান। এছাড়া মাশরুমও
খুবই পুষ্টকর সবজি। যার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তা হার্ট অ্যাটাক কমানোর পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

টমেটো: টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা রক্তনালির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিনের মাত্রা কম থাকলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত টমেটো খান। সেটা সালাদ বা অন্য যেকোনো ভাবে খেতে পারেন।

কমলা: কমলায় প্রচুন পরিমাণে পটাসিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কমলায় ‘পেকটিন’ জাতীয় আঁশ পাওয়া যায়। যা দেহের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, একটি মধ্যম আকৃতির কমলায় প্রায় ৬২ গ্রাম ক্যালরি থাকে। তাই প্রতিদিন কমলা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

আখরোট: আখরোটে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, কপার এবং ম্যাঙ্গানিজ। আপনি যদি প্রতিদিন কয়েকটি আখরোট খান, তবে খারাপ কোলেস্টেরল কমে যাবে এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পাবে। এটি রক্তনালির স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে। এ ছাড়া হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

রসুন: হার্টকে সুস্থ রাখতে রসুন খুবই উপকারী। রসুনকে নিয়মিত তরকারিতে ব্যবহার করে খেলে হার্ট সতেজ থাকে। এছাড়াও কেউ যদি রসুনকে ছোট ছোট করে গরম পানিতে দুই  মিনিট ফুটিয়ে খায়, তাহলে হার্ট সুস্থ থাকে।

বাদাম, চিয়া সিড: বাদাম ও চিয়া সিড হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বাদামে (চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেচতা, হেজেলনাট) পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন, প্রোটিন, আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ লবণ পাওয়া যায়। এছাড়া চিয়া সিডে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। সুতরাং নিয়মিত বাদাম ও চিয়া সিড খেলে রক্তচাপ হ্রাস পায়। চিয়া সিড দুধ, দই, স্মুদি ও সালাদে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এগুলো খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। 

বেরি: নিয়মিত বেরি ফল খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যায়। কারণ এই ফলে প্রচুর অ্যান্টঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। বাজারে বিভিন্ন রকমের বেরি পাওয়া যায়। যেমন: রাস্পবেরি, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং ব্লাকবেরি।  এগুলো হার্টকে সতেজ রাখার পাশাপাশি প্রদাহ মুক্ত এবং মানসিক চাপ থেকে রক্ষা করে।

ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলোকে সতেজ রাখে। যা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। 

এছাড়া হার্টকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে, সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে, মানসিক চাপ কমাতে হবে এবং ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ এবং জীবনযাপন করলে এ ঝুঁকি কিছুট হলেও কমানো সম্ভব।


সর্বশেষ সংবাদ