শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না, এইচএসসি’র সিদ্ধান্তও আজ নয়

আজ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির বৈঠক হলেও এইচএসসির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে না
আজ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির বৈঠক হলেও এইচএসসির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসছে না  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের কারণে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে গত এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়ে যায়। কবে এ পরীক্ষা হবে তাও কারো জানা নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তাও অনিশ্চিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, করোনা পরিস্থিতি এখনও অনুকূলে নয়। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শীতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে শিক্ষাবোর্ড বলছে. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে শিগগিরই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটি। তবে বৈঠক থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে না বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। একাধিক বোর্ড চেয়ারম্যানও সেদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে এইচএসসি পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া হবে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।

তারা বলছেন, সবাই এখন করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব সহজে খুলছে না। ফলে পরীক্ষা নিতে আরও দেরি হতে পারে। কবে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তারা। তবে পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তারা বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অন্তত ১৫ দিন পর এ পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে।

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এইচএসসি পরীক্ষা হবে না, তা চূড়ান্ত। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতিও এখনও তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের (আজ) বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে না। এটি বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়মিত বৈঠকের অংশ। পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। করোনার কারণে যে সংকট, তার মধ্যে আমরাও আছি। এখন পরীক্ষা কীভাবে হবে? এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

জিয়াউল হক বলেন, সময়সূচি প্রকাশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকেও এ বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য নয়। পরীক্ষার বিষয়ে এ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত একটাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে পরীক্ষা হবে না বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’ গত সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন। এসময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তবে তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে লক্ষ্য করে বলেন, ‘এখনই পরীক্ষা নিতে হবে কারণ কী? কলেজ তো চলছে না। আমি সামগ্রিক চিন্তা করে কাজ করি। ইউরোপ-আমেরিকা, ভারতে এখন করোনার কী অবস্থা? ওরা ভেবেছিল কমে যাবে।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। তবে দেশে গত ৮ মার্চ থেকে করোনার প্রকোপ শুরু হলে এই পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ