বৃষ্টির আশায় ধুমধাম করে মেঘ-বৃষ্টির বিয়ে, কাবিন ৯ লাখ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৩, ০৭:০৪ PM , আপডেট: ১৩ মে ২০২৩, ০৭:০৪ PM
ক্যালেন্ডারের পাতায় এখন বৈশাখ। কাঠফাটা রোদে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তাই বৃষ্টির আশায় গ্রামবাংলার প্রাচীন রীতি পালন ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে আয়োজন করে দেওয়া হল ব্যাঙের বিয়ে। বরের নাম মেঘ, আর কনের নাম বৃষ্টি। দুজনে মিলে মেঘবৃষ্টি।
ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি মেনেই বুধবার রাতে পীরগঞ্জ উপজেলায় ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে দুই ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিলো বৌভাত। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অতিথিদের।
ক্ষুদ্রাকার এ বর কনেকে দেখতে ভিড় জমায় হাজারো উৎসুক জনতা। আগ্রহের যেন শেষ নেই কারও। সবচেয়ে আকর্ষনীয় ছিল বিশাল অংকের মোহরানা।
আয়োজকরা জানান, প্রবাদ বাক্য রয়েছে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। তাই বৃষ্টির আশায় অভিনবভাবে এ বিয়ের আয়োজন করেন। চলমান খরায় রোপা আমনের মাঠ প্রস্তুত করতে পারছেন না কৃষকরা। মাঠে সেচ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফেটে চৌচির হয়ে পড়ছে মাঠ।
এবছর দিন দিন বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা, নেই বৃষ্টি। চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। পুড়ছে চারদিক। নাভিশ্বাস উঠেছে জন জীবনে । খরা ও দাবদাহে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে-সেই বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।
পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে মেঘ নামের বর ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, আর কনে হিসেবে বৃষ্টি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে। রঙ্গিন শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ পরানো হয় ও আলতা দিয়েও সাজানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। পরে অনুষ্ঠানিক ভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়ণপুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসে বর পক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে দেনমোহর ধার্য করে বর ও কনেকে ইজাব-কবুল করান কাজল আহাম্মেদ। সম্পন্ন করা হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে ঢল নামে নারী পুরুষের।
কনে বৃষ্টির বাবা আমজাদ আলী জানান, এ বিয়ের দেনমোহর ধার্য করা হয় ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। বিয়ে শেষে উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
তামিমা আক্তার নামে এক কলেজশিক্ষার্থী জানান, ব্যাঙের বিয়ের কথা শুনেছি কখনও দেখিনি। মানুষের মত ব্যাঙের বিয়ে এই প্রথম দেখছি। তবে দেনমোহর এত বেশি দেখে অবাক। খুব ভাল লাগছে।
তবে আকরাম আলী নামে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী জানান, এটি একটি কুসংস্কার। এমন আয়োজন এবার প্রথম দেখছি।
ব্যাঙের বিয়ে বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, লোকজ বিশ্বাস থেকে প্রবাহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।