চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শাবিপ্রবিতে মানববন্ধন

চা শ্রমিকদের জন্য শাবিপ্রবিতে মানববন্ধন
চা শ্রমিকদের জন্য শাবিপ্রবিতে মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

দৈনিক ‘২৪ কেজি’ চা পাতা তোলার শর্তে ধার্যকৃত চা শ্রমিকদের সর্বোচ্চ মুজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবি আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এ মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের সাথে অংশ নেন একাধিক চা শ্রমিক প্রতিনিধি।

মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের সমাজের একটা অংশ আমাদের চা শ্রমিকরা যারা অর্থনীতিকে অনেক বড় একটা যোগান দিয়ে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তারা মজুরি বাড়াতে চাইছে ব্যাপারটা এই রকম না। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আগে থেকেই তাদের মজুরি ধীরে ধীরে ৭০-৮০ থেকে ১২০ করা হয়েছে। এই ১২০ টাকা পর্যন্ত মজুুরি বাড়াতে প্রায় ৫০ বছর লেগে গেছে। এই মুহুর্তে ১২০ টাকা মজুরি প্রদান করা সম্পূর্ণরূপে একটা জুলুম। আমরা সরাসরি তাদের সাথে দাঁড়াতে পারছি না কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি এখান থেকে সংহতি জানাতে। সরকার চাইলেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

বক্তারা বলেন, এতবছর যাবত কেন এই পার্টিকুলার জনগুষ্টির ওপর এতবছর ধরে কেন সুনজর দেয়া হচ্ছে না? সমাজের প্রত্যেকটা অংশের জন্য আলাদা আলাদা মৌলিক অধিকার থাকবে কেন? খেতে পারার অধিকার, পড়তে পারার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার এগুলো তাদের মৌলিক অধিকার । মৌলিক অধিকার কেন সমাজের একটা অংশ পাবে একটা অংশ পাবে না? এই অসমতা কেন আমাদের এই প্রশ্ন সরকারের কাছে রাষ্ট্রের কাছে প্রশাসনের কাছে পাশাপাশি আমাদের নিজেদের কাছেও যে আমরা কি করছি তাদের সাথে।
বক্তারা আরও বলেন, চা শ্রমিকদের ভিতরে যে দৈনিক ২৪ কেজি চা যদি তুলতে পারে তাহলে তার মজুরি হচ্ছে ১২০ টাকা। সেক্ষেত্রে দেখা যায় বেশিরভাগ শ্রমিকই ২৪ কেজি চা পাতা তুলতে পারে না। বর্তমানে যেখানে ২০-৩০ টাকার কমে কোথাও ভালো চা পাওয়া যায় না সেখানে চা শ্রমিকরা আসলে ১২০ টাকা দিয়ে কতটুকু ভালো জীবনযাপন করতে পারে?  বর্তমান সময়ে ১২০ টাকা; কারো কারো ক্ষেত্রে আরও কম, এই টাকায় আসলে এক দিন কি এক বেলাও চলা সম্ভব না। কারো ফ্যামিলিতে বৃদ্ধ বাবা মা আছে যারা চা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পারেনা। চা শ্রমিকদের মতো চা পাতার ভর্তা দিয়ে নাস্তা বা চা দিয়ে মসলা বানিয়ে খাবার খেয়ে কোনো মানুষের পক্ষে জীবনযাপন করা একবিংশ শতাব্দীতে সম্ভব না।

সমাবেশে চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রূপালী পাল বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির এই আন্দোলন অনেক আগে থেকেই। এখন দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার কারণে এ আন্দোলন আরও জোরদার করা হয়েছে। আজকে প্রায় ৬ দিন হয়ে গেছে তাদের আন্দোলন চলছে কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা মালিক পক্ষ থেকে তেমন সাড়া পায়নি। চা শ্রমিক ছাড়া যারা বাগানের বাইরে থাকেন তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। কিন্তু চা সহজলভ্য হওয়ায় চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার সবকিছুই নির্ভর করে চা এর ওপর। তারা সকালে চা পাতার ভর্তার সাথে রুটি দিয়ে নাস্তা করে নতুবা ভাত খেতে গেলেও চা দিয়ে ভাত খায়। বর্তমানে যেটা বাইরের মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না। বর্তমানে ১২০ টাকা দিয়ে আসলে কিছুই হয়না। আর এখন সবকিছুর দাম এমনভাবে বাড়ছে যে তাদের জন্য হয়ত এই ভাত খাওয়াটাও অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। এজন্যই তাদের এই মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন।

 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence