শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আর্তনাদ

‘শেষবার শুধু আম্মু বলেছিল ঘরে পানি ঢুকছে, তারপর কল কেটে যায়’

সিলেটে বন্যা
সিলেটে বন্যা  © ফাইল ছবি

বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পরিবার-পরিজনের খোঁজ-খবর নিতে পারছেন না শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে যাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী। পরিবারের কাউকেই মোবাইল কলে পাওয়া যাচ্ছে না এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের মোবাইলও বন্ধ দেখাচ্ছে। ফলে পরিবারের জন্য শিক্ষার্থীদের  মধ্যে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা, চিন্তা আর আর্তনাদ।

উৎকণ্ঠা জানিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার নুসরাত জেরিন বলেন, তিনদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আমার আব্বু আম্মু কই আছেন? কি করছেন? কিচ্ছুই জানি না। শেষ বার যখন কথা হয় আম্মু বলছিলেন বন্যায় নিচতলায় পানি ঢুকছে। কথার মধ্যেই কল কেটে যায়। এরপর থেকে এখন অব্দি আর যোগাযোগ করতে পারিনি। আত্মীয়-স্বজন যাদের নাম্বার আছে কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারতেছি না। গোটা এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরের কোনো আপডেট কেউ কি জানেন? জানলে প্লিজ জানাবেন।

সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার কামার গাঁওয়ের বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোছাম্মৎ ছাদেকা বেগম বলেন, বন্যায় বাড়িঘরে পানি ওঠে গেছে। ভোগান্তির মধ্যে আছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা কোথায় আছেন? কি করছেন? কিছুই জানি না। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি।

তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় যোগাযোগ হয়েছিল। তারপর থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। পরিবারের সবাই আমাকে নিয়ে হয়তো চিন্তায় আছেন। খুব দ্রুত যেন সবকিছু ঠিক হয়ে যায় এ প্রার্থনা করি।

বেলাল আহমেদ নামের আরেকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, তিনদিন পর বাড়ির খবর পেলাম। চাচার সঙ্গে কথা হলো তাও এক মিনিটের কম। লাইনটা কেটে গেল। বাড়িতে পানি উঠলেও ঘরে পানি ঢুকেনি। বাড়ির সবাই ভালো আছেন। আপাতত এ খবরটাই স্বস্তির। কোম্পানীগঞ্জের কাঠালবাড়ী এলাকার ছোট্ট একটি বালুর ডিবিতে গরু-ভেড়া আর হাজার খানেক মানুষের বাস। এমন আরও অনেক অস্বস্তি কুড়িয়েছি এ দু’দিন ঘুরে ঘুরে। মানুষ বেঁচে থাকুক, এটাই চাওয়া।

এদিকে, শনিবার (১৮ জুন) বিকেল থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তাতে পূর্বের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে পানি। এছাড়া বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক, সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে। ফলে একটু স্বস্তি ও আশার আলো খুঁজে পাচ্ছেন বন্যার্ত মানুষরা। পানি কমায় কেউ কেউ আবার নিজ নিজ আবাসস্থলে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

অন্যদিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা কবলিত একালাগুলো থেকে মানুষদের উদ্ধার করতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্ট গার্ডের সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে হাজারও মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছেন তারা। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence