ছাত্রলীগের সংঘর্ষ—নিরাপত্তা শংকায় পরীক্ষা বর্জন চুয়েট শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা এবং যন্ত্রতড়িৎ ও শিল্পকৌশল বিভাগের দুইশ’ এর বেশী শিক্ষার্থী তাদের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় টার্মের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। রোববার (২০ মার্চ) তৃতীয় বর্ষের যন্ত্রতড়িৎ ও শিল্পকৌশল (এমআইই) বিভাগ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের পরদিন গতকাল সোমবার (২১ মার্চ) পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা পরীক্ষার্থীর সিংহভাগ শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। গত ১৭ মার্চ দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ফুল দেওয়া কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কমপক্ষে তিনবার সংঘর্ষ হয়। একই দিন গভীর রাতে শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল ও তারেক হুদা হলের শাফক্বাত রুম্মান, জাহিন দাইয়ান, ফাহিম আরিফসহ প্রায় ৩০ জন ছাত্রলীগ কর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শেখ রাসেল হলে অতর্কিত হামলা চালায়।

এতে শেখ রাসেল হলের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দীন চৌধুরী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন: বান্ধবীসহ সাবেক নেতাকে বেধড়ক পিটুনি ছাত্রলীগের

এই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, গভীর রাতে হলে প্রবেশ করে তাদের একজন সহপাঠীকে আহত করায় তারা নিরাপত্তা শংকায় ছিলেন। যে কারণে তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেননি। এ ছাড়া তারা এ ঘটনায় জড়িত সবার শাস্তির দাবি ও করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি চুয়েটে থাকাকালীন সময়ে এমন ঘটনা দেখিনি। যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তারা যে কোনো সময়ে এর চেয়ে বড় কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ খুব শিগগিরই দোষীদের শাস্তি দিয়ে নির্বিঘ্নে আমাদের পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে।’

আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা সমস্যা না থাকলেও বন্ধুকে এমন আহত অবস্থায় দেখে পড়াশোনা করার মতো মানসিকতা ছিল না।’

এর আগে এসব শিক্ষার্থী নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বর্ণনা করে নিজ নিজ বিভাগে পরীক্ষা পেছানোর জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রে পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনাকে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে আখ্যা দেন।

তবে আবাসিক হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম বলেন, ‘হলে হামলার ঘটনার পর আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। সে পর্যন্ত আমি শিক্ষার্থীদেরকে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।’


সর্বশেষ সংবাদ