শিক্ষামন্ত্রীকে এবার হেলিকপ্টারে শাবিপ্রবিতে যাওয়ার আহবান

শিক্ষামন্ত্রী ও আনু মুহাম্মদ
শিক্ষামন্ত্রী ও আনু মুহাম্মদ  © ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে এবার হেলিকপ্টারে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (২৪ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে বেলা ৩টা পর্যন্ত কর্মসূচিটি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন। এর আগে গতকাল রবিবার (২৩ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রীকে ডাবল মাস্ক পরে সেখানে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছেন। আমরা যে সময়ে রাজধানীর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যানজটের কারণে যেতে পারব না, শিক্ষামন্ত্রীর সুযোগ রয়েছে তার চেয়ে কম সময়ে প্রয়োজনে হেলিকপ্টারে করে সিলেটে যাওয়ার।

তিনি বলেন, সিলেটে গিয়ে কথা বলা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতায় সরকারের আরেকটি উদ্দেশ্য, শিক্ষার্থীরা যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আর তারা অধৈর্য হয়ে কোনো কিছু করে বসলে, তা কেন্দ্র করে সরকার তাদের দমন করবে। কিন্তু সরকার তরুণদের চেনে না।

আনু মুহাম্মদ বলেন, শাহজালালের উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে অন্যান্য উপাচার্য পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদি বিষয়টি সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে সেটি আমাদের জন্য ভালো খবর। সরকারের উচিত হবে, উপাচার্যেরা পদত্যাগ করার পরপর একটি তদন্ত কমিটি করা। তদন্তের মাধ্যমে তাঁরা কী করেছেন, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা এসেছি শিক্ষকসমাজকে বড় কলঙ্ক থেকে বাঁচাতে। ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষায় সিলেটে যে ঘটনা ঘটেছে, তা এখন গোটা শিক্ষকসমাজের সম্মান রক্ষায় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। এর মূল কারণ, কীভাবে উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে, তা আমরা সবাই জানি।’ তিনি বলেন, যারা সরকারের প্রতি আনুগত্য দেখাতে পারবেন, তাদের যোগ্যতা তত বেশি। সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে ছাত্রসংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া এখন উপাচার্যের কাজ।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, এসব উপাচার্যের পড়াশোনা, পরীক্ষা নেওয়া, খাতা দেখা, গবেষণা—কোনো কিছুতে সময় নেই। কিন্তু সারা দিন বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে ঘোরাঘুরি করতে করতে যখন মেরুদণ্ড বিলুপ্ত হয়, তারপর তারা উপাচার্য হচ্ছেন। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, দেশে ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন দুই শতাধিক ব্যক্তি রয়েছেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, সিলেটে সাধারণ ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দোলন ছিল, তারা হলে ভালো খাবার পাচ্ছেন না। বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে প্রশাসনের খুশি হওয়া উচিত ছিল যে শিক্ষার্থীরা এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। কিন্তু প্রশাসন তাদের পুলিশ দ্বারা নির্যাতন করেছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ঘেরাও সাধারণ বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক তিনি। তার কাছেই তো দাবি জানানো হবে। কিন্তু তাদের নির্যাতন করা মানায় না।

প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, নৃবিজ্ঞান বিভগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ফাহিরনা দূর্রাত, ব্যবস্থাপনা বিভাগের তাহনিমা খানম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence