নিয়োগ বাণিজ্যে শিক্ষক-কর্মচারী, অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:১০ PM , আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:১৫ PM
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) নিয়োগ বাণিজ্যের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এই দাবি তুলে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্বদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতি। আজ শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে যবিপ্রবির মাইকেল মধুসূদন ও কাম গ্রন্থাগার ভবনের সামনের সড়কে তিন শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড হতে অনতিবিলম্বে অপসারণ; নিয়োগ বাণিজ্যের অন্যতম সহযোগী উপাচার্যের অর্ডারলী পিয়ন কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগকে বিচারের আওতায় আনা।
আরও পড়ুন: আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
যবিপ্রবি কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির সম্মিলিত ব্যনারে মানববন্ধনে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন নেতাকর্মীরা। বক্তারা বলেন, কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডে অধ্যাপক ড. জাহিদের সদস্য পদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ৮/৯ মাস স্বপদে বহাল রয়েছেন। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভা রিজেন্ট বোর্ড ও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ বোর্ড হতে অনতিবিলম্বে অপসারণ করার দাবি জানান তারা।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়া মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা। যতক্ষণ দাবি মানা না হবে ততক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটি ও রিজেন্ট বোর্ডেও সকল কর্মকান্ড হতে বিরত থাকবেন বলে হুশিয়ারিও দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম কামরুল হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে নিয়োগ বাণিজ্যেও মূল হোতা এ ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে চাপা গুঞ্জন সবসময়ই ছিলো। সাহসের অভাবে কেউ কখনও প্রতিবাদ করতে সাহস করেননি। উপাচার্যের নিকট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিদাওয়া নিয়ে গেলেও বিগত আড়াই বছর ধরে কোনো দাবির সুরাহা হচ্ছে না।
মানববন্ধনে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী হেলালুর ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শুধু যবিপ্রবিতেই আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রে অযাচিত শর্ত আরোপ করা হয়। আপগ্রেডেশনের বিষয়ে উপাচার্যের সম্মতি থাকলেও তার আশেপাশে একটি চক্র গড়ে উঠেছে যারা কর্মকর্তা কর্মচারীদের তাদের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে নিজেদের একটি বলয় তৈরি করে দুর্নীতির পথ সচল রাখতে চাইছে।
আরও পড়ুন: রাবিপ্রবির মেধা তালিকা প্রকাশ
বারবার নিয়োগ বোর্ডে ড. ইকবাল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ প্রশ্ন রিজেন্ট বোর্ডেকে করতে হবে। রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ বাছাই বোর্ড গঠিত হয়। ড. ইকবাল যবিপ্রবি উপাচার্যের মনোনীত নিয়োগ বাছাই বোর্ড মেম্বার বললে তিনি তা অস্বীকার করেন।
অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতি কর্তৃক আনীত অভিযোগের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, যদি তদন্ত করার মত কোন অভিযোগ পায় তাহলে তদন্ত করবো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতি একই ব্যানারে একসাথে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারে না। এ ধরণের মানববন্ধন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান অনুযায়ী অবৈধ এবং করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আজকের এই মানববন্ধন করার অনুমতিও হয়নি। সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালকে অশান্ত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এসব করা হচ্ছে।