কোটি টাকার অনিয়ম করেও বহাল তবিয়তে প্রকল্প পরিচালক
- ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৫:২২ PM , আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:১৫ PM
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক আশিকুজ্জামান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। কিন্তু তারপরও প্রকল্প পরিচালক পদে বহাল আছেন অভিযুক্ত আশিকুজ্জামান।
বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই আশিকুজ্জামান ভূঁইয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার দায়িত্ব গ্রহণের পরেই এই প্রকল্পে ঘটে একের পর এক নিয়ম। তার অনিয়ম সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুদক সকলেই অবগত আছেন।
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া প্রকল্প পরিচালক থাকা অবস্থায় বিধিবহির্ভূতভাবে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র বাবদ সর্বমোট ২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৯ টাকা অগ্রীম প্রদান করেন। এসকল পণ্যের একটি বড় অংশের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হচ্ছে।
এছাড়া, প্রকল্প পরিচালক থাকা অবস্থায় আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া প্রকল্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজ অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় কোটি টাকা ট্রান্সফার করেছেন। কয়েক মাস পর সেই টাকা আবার আগের অ্যাকাউন্টে ফেরতও দেন। তবে এটি নিয়ম বহির্ভূত বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নিজ একাউন্টে নেওয়াসহ এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে।
তবে, এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপ-পরিচালক (হিসাব) শেখ সুজাউদ্দিন বলেন, ‘এতে আমাদের কোনো পরামর্শও নেয়া হয়নি। আমাদের কাছে কোনো ফাইলও আসেনি। পরিকল্পনা, প্ল্যানিং ও ওয়ার্কস অফিস তাদের নিজ দায়িত্বে খুলেছে।’
উপ-পরিচালক (প্ল্যানিং) তুহিন মাহমুদ বলেন, সহকারী পরিচালক আমাকে একটি যৌথ একাউন্ট খোলার জন্য বলেছিলেন। সেজন্য তিনি আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি প্রজেক্ট ডিরেক্টরসহ (পিডি) সকলের কথায় সিগনেচার দিয়ে দিয়েছি।
এদিকে, বশেমুরবিপ্রবি অগ্রনী ব্যাংক শাখার তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক কার্তিক চন্দ্র মন্ডল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পিডির লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে লেনদেন করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়েছে কি না; সেটা তিনি বলতে পারবেন।
অনিয়মের সকল বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অনিয়মের এই বিষয়টি ইউজিসি জানে, দুদক জানে, সরকার জানে। সুতরাং আমার বিশেষ কিছু করার নেই। বিষয়টা উপর মহল অবগত না থাকলে আমি তাদের অবগত করতাম।