নোবিপ্রবি

প্রাক্তন উপাচার্যের মন্তব্যে ক্ষোভ, ক্ষমা চাইতে বললেন বর্তমান উপাচার্য

  © টিডিসি ফটো

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো দিদার-উল-আলমকে লক্ষ্য করে করা এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালটির শিক্ষক-কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে তার (অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান) এ বক্তব্যে প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনারও আহবান জানান তারা।

জানা যায়, সম্প্রতি বেসরকারি এক টেলিভিশনের টকশোতে ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলাম। বলা যায় যে, বিগত ৪০ বছর যাবত সবাই আমাকে চেনে। আমারটা (উপাচার্য নিয়োগের সময়) কিন্তু এজেন্সিতে যাচাই হয়েছে। আর যিনি (অধ্যাপক ড. মো দিদার-উল-আলম) একেবারে বাংলাদেশই মানে না, আওয়ামী লীগের লোক তো না-ই; তাকে ওখানকার উপাচার্য করা হলো। এই ফাইলটা (উপাচার্য নিয়োগের) কিন্তু সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হাতে গিয়ে সাইন হয়েছে। এটা কিন্তু আর এজেন্সিতে গেলো না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো দিদার-উল-আলমের ছবি ব্যবহার করেও একটি স্ট্যাটাস দেন অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে বর্তমান উপাচার্যকেও যুক্ত করে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

মূলত এরপরই শুরু হয় সমালোচনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা মনে করেন, এটা শুধু উপাচার্যকে নয়, পুরো নোবিপ্রবির সম্মানহানি করা হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশন আলাদাভাবে বিবৃতি দিয়েছে।

এতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান তার এই বক্তব্যে মিথ্যা, বানোয়াট এবং সম্পূর্ণ মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। উপাচার্যকে অপমান করার অর্থ প্রতিষ্ঠানকে অপমান করা এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক ক্ষমতাবলের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাঁদের দূরদর্শিতাকে জাতির সামনে খাটো করা হয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনসমূহের নেতারা। একইসঙ্গে অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানকে এই মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনার আহবানও জানান তারা।

এ ব্যাপারে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো দিদার-উল-আলম বলেন, ড. ওয়াহিদুজ্জামানের এসব মন্তব্যের জন্য তার ক্ষমা চাওয়া উচিত। এসব বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই, সব ভিত্তিহীন। এর কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবে না বলেও চ্যালেঞ্জ করেছেন বর্তমান উপাচার্য।

তিনি আরও বলেন, ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানের উপাচার্য দায়িত্বকালীন সময়ের দুর্নীতি সম্পর্কে সকলেই অবগত আছেন। সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইউজিসির সেই তদন্ত আটকিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান নোবিপ্রবি উপাচার্য।

ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানের ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের সাথে তুলনা করে নিজেকেই ছোট প্রমাণ করেছেন ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি প্রশাসনের সময়ে স্পোর্টস বিভাগে দায়িত্বপালন সম্পর্কে তিনি জানান, ছাত্রজীবন থেকে খেলাধুলায় তার অনেক সুনাম রয়েছে। তার বিপরীতে এমন দক্ষ কেউ না থাকায় দল বিবেচনা না করে বিএনপির আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দায়িত্বের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় এ পদ থেকে সরে যেতে চাইলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে আওয়ামী সরকারের আমলে দীর্ঘ সময়সহ মোট ১২ বছর এই দায়িত্ব পালন করতে হয় তাকে।


সর্বশেষ সংবাদ