আবরার হত্যা: ৮ দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল বুয়েট ক্যাম্পাস (ভিডিও)

  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে এবং আট দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। আবরারের খুনীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে ‘বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এই মিছিল শুরু করেন তারা। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি।

শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, আবরারের খুনিদের ফাঁসি দেওয়া, ৭২ ঘন্টার মধ্যে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার করা, মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দিতে হবে, উপাচার্যকে ৫টার মধ্যে ক্যাম্পাসে আসতে হবে, আবাসিক হলে ভিন্ন মতাবলম্বীদের নির্যাতনে জড়িতদের বিচার করতে হবে, আগের ঘটনাগুলোয় জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে, শের ই বাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে।

আন্দোলনকারীরা ‘খুনীদের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই’, ‘প্রশাসনের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ভিসি তুই নিরব কেন, জবাব চাই, দিতে হবে’, ‘আমার ভাইকে মারলি কেন? জবাব চাই দিতে হবে’,  ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম আবরারের জানাযায় আসেনি। এখন পর্যন্ত ক্যাম্পাসেও আসেনি।’ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

উল্লেখ্য, রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করে বুয়েটের ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৯ জনকে।

এছাড়া বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতিসহ কমিটির ১১ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

সকাল পৌনে ৮টার দিকে আবরারের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়ার রায়ডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সেখানে হাজারও মানুষ জড়ো হন। প্রতিবেশী-স্বজনদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদেরও কাঁদতে দেখা যায়।

এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আবরারের মরদেহ কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সকাল সাড়ে ৬টায় তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। দুপুরে আবরারের তৃতীয় জানাজা  শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ